Discover millions of ebooks, audiobooks, and so much more with a free trial

Only $11.99/month after trial. Cancel anytime.

প্যারেন্টিং এন ইসলামিক আইডোলজি ফর চিলড্রেন / Parenting - An Islamic Ideology for Children (Bengali)
প্যারেন্টিং এন ইসলামিক আইডোলজি ফর চিলড্রেন / Parenting - An Islamic Ideology for Children (Bengali)
প্যারেন্টিং এন ইসলামিক আইডোলজি ফর চিলড্রেন / Parenting - An Islamic Ideology for Children (Bengali)
Ebook577 pages3 hours

প্যারেন্টিং এন ইসলামিক আইডোলজি ফর চিলড্রেন / Parenting - An Islamic Ideology for Children (Bengali)

Rating: 3.5 out of 5 stars

3.5/5

()

Read preview

About this ebook

সন্তান তথা ছেলে-মেয়েরা প্রত্যেক পরিবারের শ্রেষ্ঠ সম্পদ। দেশের সম্পদ। সমগ্র উম্মাহর সম্পদ। ফলে তাদের পড়ালেখা ও আদর্শ জীবন গঠনে প্রত্যেক পিতা-মাতাই উদ্বিগ্ন। প্রত্যেক পিতা-মাতাই ব্যস্ত। তাই তাদের এ প্রতিষ্ঠানে, ঐ প্রতিষ্ঠানে ভর্তি করাচ্ছেন; এই স্যার নয়, ঐ স্যারের কাছে পড়ালেখার জন্যে দিচ্ছেন। কিন্তু তাতেও ছেলে-মেয়েদের পড়ালেখা ও জীবন গঠনে অনেক পিতা-মাতা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলতে পারছেন না। প্রতিটি মুহূর্তই পিতা-মাতাকে দুশ্চিন্তার মধ্যে দিনাতিপাত করতে হচ্ছে। ছেলের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের জন্য পিতার হাতে হাতকড়া লাগানো হচ্ছে, পিতাকে জেল খেটে পুলিশের বেতের আঘাত সহ্য করতে হচ্ছে। সন্তানের হাতে পিতা-মাতাকে খুন হতে হচ্ছে। মেয়ের অনাদর্শিক প্রেমের দরুন পিতা-মাতাকে জীবন দিতে হচ্ছে ইত্যাদি আরও কত কী! সবশেষে ছেলে-মেয়েরা উচ্চ ডিগ্রীধারী হওয়ার পরও পিতা-মাতাকে বৃদ্ধাশ্রমে বা আশ্রয় কেন্দ্রে বা সরকারের বয়স্ককালীন ভাতা নিয়ে দু’মুঠো ভাতের যোগান দিতে হচ্ছে। এখানেই শেষ নয়; আল কুরআন ও আল হাদীস সাক্ষী দিচ্ছে, মৃত্যুর পর পিতা-মাতাকে জবাবদিহির কাঠগড়ায়ও দাঁড়াতে হবে। কিন্তু কেন? কেন এমনটি হবে?? কোথায় রয়েছে পিতা-মাতার ঘাটতি??? কিভাবে ছেলে-মেয়েদের প্রতিপালন করলে বা জীবন গড়ে দিতে পারলে পিতা-মাতারা উল্লিখিত পরিস্থিতি থেকে পাবে মুক্তি, দুনিয়া ও আখিরাতে পাবে সম্মান- সে বিষয়টি নিয়ে গভীর চিন্তা-ভাবনা করে আল কুরআনুল কারীম ও আল হাদীসের ভিত্তিতে সন্তানদের সুশিক্ষা-কুশিক্ষার প্র্যাকটিস ও বাস্তব সমাজচিত্র চোখের সামনে রেখে গবেষণালব্ধ তথ্যের সমাহার ঘটিয়ে রচনা করেছি একটি চমৎকার বই- “প্যারেন্টিং এন ইসলামিক আইজোলজি ফর চিলড্রেন।” বাংলাদেশে এ ধরনের বই এই প্রথম এবং একমাত্র।

LanguageBengali
Release dateMar 20, 2015
ISBN9781310249006
প্যারেন্টিং এন ইসলামিক আইডোলজি ফর চিলড্রেন / Parenting - An Islamic Ideology for Children (Bengali)

Read more from জাবেদ মুহাম্মাদ Zabed Mohammad

Related to প্যারেন্টিং এন ইসলামিক আইডোলজি ফর চিলড্রেন / Parenting - An Islamic Ideology for Children (Bengali)

Related categories

Reviews for প্যারেন্টিং এন ইসলামিক আইডোলজি ফর চিলড্রেন / Parenting - An Islamic Ideology for Children (Bengali)

Rating: 3.6666666666666665 out of 5 stars
3.5/5

3 ratings0 reviews

What did you think?

Tap to rate

Review must be at least 10 words

    Book preview

    প্যারেন্টিং এন ইসলামিক আইডোলজি ফর চিলড্রেন / Parenting - An Islamic Ideology for Children (Bengali) - জাবেদ মুহাম্মাদ Zabed Mohammad

    তোহফা

    ছোটবেলায় হারানো আদরের উৎস যার অনুপস্থিতি আমাকে আজও ব্যাকুল করে তোলে তিনি আমাদের শ্রদ্ধেয় পিতা মরহুম মুহাম্মাদ নূরুল ইসলাম চৌধুরী, যিনি চির শায়িত আছেন কুমিল্লা জেলাধীন ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার মিরপুর গ্রামে। ঠিক বাড়ির উত্তর পাশের কবরস্থানে। উঠোন থেকে উত্তর দিকে তাকালেই সেই কবরস্থান চোখে পড়ে। কিন্তু এত নিকটে হওয়া সত্ত্বেও কোনো খোঁজ-খবর নিতে পারছি না কোনোভাবে; কেমন আছে তাও জানার সামর্থ্য নেই আমাদের। তাইতো শুধু দু‘আ করছি মহান স্রষ্টা আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা‘আলার দরবারে। হে আল্লাহ! আমাদের বাবাকে জান্নাতুল ফেরদাউসের একজন মেহমান করে নিও বিনা হিসাবে। পিতৃহীন সন্তানদের এ মিনতি রাখো তবে!

    আর আমাদের মা আলহামদু লিল্লাহ বেঁচে আছেন আমাদের মাঝে। হে আল্লাহ! আমাদের মায়ের নেক হায়াত বৃদ্ধি করে দাও বহুগুণে। তিনি যখন পৃথিবী থেকে বিদায় নিবেন তখন তাকে নিবে কালিমা পাঠের মধ্য দিয়ে। সবশেষে দু’হাত তুলে আরেকবার প্রার্থনা করছি তোমার দরবারে।

    হে আমাদের প্রতিপালক! যেদিন (চূড়ান্ত) হিসাব-নিকাশ হবে, সেদিন তুমি আমাকে, আমার পিতা-মাতাকে এবং সকল ঈমানদার মানুষদের (তোমার অনুগ্রহ দ্বারা) ক্ষমা করে দিও। (আল কুরআন, সূরা ইবরাহীম, ১৪ : ৪১)

    জাবেদ মুহাম্মাদ

    লেখকের অভিব্যক্তি

    সন্তান তথা ছেলে-মেয়েরা প্রত্যেক পরিবারের শ্রেষ্ঠ সম্পদ। দেশের সম্পদ। সমগ্র উম্মাহর সম্পদ। ফলে তাদের পড়ালেখা ও আদর্শ জীবন গঠনে প্রত্যেক পিতা-মাতাই উদ্বিগ্ন। প্রত্যেক পিতা-মাতাই ব্যস্ত। তাই তাদের এ প্রতিষ্ঠানে, ঐ প্রতিষ্ঠানে ভর্তি করাচ্ছেন; এই স্যার নয়, ঐ স্যারের কাছে পড়ালেখার জন্যে দিচ্ছেন। কিন্তু তাতেও ছেলে-মেয়েদের পড়ালেখা ও জীবন গঠনে অনেক পিতা-মাতা স্বস্তির নি:শ্বাস ফেলতে পারছেন না। প্রতিটি মুহূর্তই পিতা-মাতাকে দুশ্চিন্তার মধ্যে দিনাতিপাত করতে হচ্ছে। ছেলের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের জন্য পিতার হাতে হাতকড়া লাগানো হচ্ছে, পিতাকে জেল খেটে পুলিশের বেতের আঘাত সহ্য করতে হচ্ছে। সন্তানের হাতে পিতা-মাতাকে খুন হতে হচ্ছে। মেয়ের অনাদর্শিক প্রেমের দরুন পিতা-মাতাকে জীবন দিতে হচ্ছে ইত্যাদি আরও কত কী! সবশেষে ছেলে-মেয়েরা উচ্চ ডিগ্রীধারী হওয়ার পরও পিতা-মাতাকে বৃদ্ধাশ্রমে বা আশ্রয় কেন্দ্রে বা সরকারের বয়স্ককালীন ভাতা নিয়ে দু’মুঠো ভাতের যোগান দিতে হচ্ছে। এখানেই শেষ নয়; আল কুরআন ও আল হাদীস সাক্ষী দিচ্ছে, মৃত্যুর পর পিতা-মাতাকে জবাবদিহির কাঠগড়ায়ও দাঁড়াতে হবে। কিন্তু কেন? কেন এমনটি হবে?? কোথায় রয়েছে পিতা-মাতার ঘাটতি??? কিভাবে ছেলে-মেয়েদের প্রতিপালন করলে বা জীবন গড়ে দিতে পারলে পিতা-মাতারা উল্লিখিত পরিস্থিতি থেকে পাবে মুক্তি, দুনিয়া ও আখিরাতে পাবে সম্মান- সে বিষয়টি নিয়ে গভীর চিন্তা-ভাবনা করে আল কুরআনুল কারীম ও আল হাদীসের ভিত্তিতে সন্তানদের সুশিক্ষা-কুশিক্ষার প্র্যাকটিস ও বাস্তব সমাজচিত্র চোখের সামনে রেখে গবেষণালব্ধ তথ্যের সমাহার ঘটিয়ে রচনা করেছি একটি চমৎকার বই- প্যারেন্টিং এন ইসলামিক আইজোলজি ফর চিলড্রেন। বাংলাদেশে এ ধরনের বই এই প্রথম এবং একমাত্র।

    বইটির পুরো সূচি-কে সাজানো হয়েছে বর্তমান প্রেক্ষাপট ও যুগ জিজ্ঞাসার সকল দিকগুলোকে সামনে রেখে। উদ্দেশ্য সন্তানদের সকল প্রকার অনাদর্শিক ভ্রান্ত পথ থেকে দূরে রেখে আদর্শিক জীবন গঠনে উদ্বুদ্ধ করা। আশা করি পিতা-মাতারা এ বইটি পাঠে ছেলে-মেয়েদের গঠনে তাদের ভূমিকা, তাদের দায়-দায়িত্ব এবং সর্বোপরি তাদের চিন্তা-চেতনা ও জীবনাচার কিভাবে সন্তানদের মন-মানসিকতায় রেখাপাত করে তা সম্পর্কে যথাযথভাবে অবগত হয়ে খুব সহজেই তাদের জীবন গঠনে দায়িত্ব ও কর্তব্য পালন করতে পারবেন। এতে ছেলে-মেয়েরা যেমন আদর্শ জীবন গঠনের দিকে এগিয়ে যাবে তেমনি পিতা-মাতারাও সার্থক পিতা-মাতা হিসেবে দুনিয়ার জীবনে সম্মানের আসনে আসীন হতে পারবেন আর আখিরাতে হবেন পুরস্কৃত। তাই এ বইটি হাতে তুলে নিয়ে ছেলে-মেয়েদের শৈশব ও বাল্যকাল থেকেই আদর্শ জীবন গঠনের সকল নিয়ম-কানুন ও দু‘আ শিক্ষা দিতে সক্ষম হলে তাদের জীবনের ভীত যেমন মযবুত হবে তেমনি তারাও এক একজন আদর্শের মূর্ত প্রতীক হয়ে গড়ে উঠতে সক্ষম হবে।

    আদর্শিক ভিত্তি ও রেফারেন্স

    বিশ্ববাসীর জন্য পরিপূর্ণ জীবন বিধান- মহান আল্লাহর বাণী আল কুরআন ও বিশ্বের শ্রেষ্ঠ শিক্ষক ও মানবতাবাদী প্রিয় নবী ও রাসূল হযরত মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর বাণী আল হাদীস এ দু’টিকে কেন্দ্র করে এ বইটি রচনা করা হয়েছে। পাশাপাশি আদর্শবাদী লেখকদের লেখা নির্ভরশীল ও গ্রহণযোগ্য কিতাবের কতিপয় রেফারেন্সও সংযোজন করা হয়েছে। যদিও কিতাবের ব্যাপারে অনেকের দৃষ্টিভঙ্গি অনেক রকম। অবশ্য পবিত্র কুরআনে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা‘আলাও ঘোষণা করেন :

    আল্লাহ এবং তাঁর রাসূল যখন কোনো বিষয়ে ফায়সালা প্রদান করেন, তখন আর সে বিষয়ে ভিন্ন কোনো সিদ্ধান্ত নেয়ার সুযোগ কোনো মুমিন পুরুষ বা নারীর নেই। (আল কুরআন, সূরা আল আহযাব, ৩৩ : ৩৬)

    আল্লাহ তা‘আলা আরো বলেন :

    তোমাদের মধ্যে কোনো বিষয়ে যদি মতবিরোধ সৃষ্টি হয়, তবে তা (মীমাংসার জন্যে) রুজু (ৎবভবৎ) করো আল্লাহ এবং রাসূলের নিকট। (আল কুরআন, সূরা আন নিসা, ০৪ : ৫৯)

    হাদীস শরীফে বর্ণিত হয়েছে :

    সুলায়মান ইব্ন হারব (র.)... আবু কাতাদা (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন: একদিন আমি ইমরান ইবন হুমায়ন (রা)-এর নিকট উপস্থিত ছিলাম, আর তখন সেখানে বাশীর ইব্ন কা‘ব (রা)ও উপস্থিত ছিলেন। এ সময় ইমরান (রা.) হাদীস বর্ণনা প্রসঙ্গে বলেন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন : শরমের সবটুকুই ভাল অথবা লজ্জার সবই উত্তম। তখন বাশীর ইব্ন কা‘ব (রা.) বলেন : আমি কোনো কিতাবে পেয়েছি যে, এক ধরনের লজ্জা শাস্তি ও সম্মানস্বরূপ এবং কিছু লজ্জা দুর্বলতা ও অক্ষমতার পরিচায়ক। ইমরান (রা.) এ হাদীস আবার উল্লেখ করলে বাশীর (রা.)ও তার কথা পুনরায় বলেন। তখন ইমরান (রা.) এত রাগান্বিত হন যে, তার চোখ লাল হয়ে যায়। এরপর তিনি বলেন : তুমি কি বুঝ না, আমি তো রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর হাদীস বর্ণনা করছি, আর তুমি এক কিতাবের কথা উল্লেখ করছো? রাবী বলেন : এ অবস্থা দেখে আমি ইমরান (রা.)-কে বলি : হে আবূ নুজায়দ! শান্ত হন, শান্ত হন। (আল হাদীস, আবু দাউদ শরীফ, অধ্যায় : আদব, হাদীস নং-৪৭২১, ই.ফা)

    আর তাই তো আল্লাহ ও রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর দিক-নির্দেশনা মাথায় রেখে আমাদের-এ বইতে যতসব তথ্য ও তত্ত্ব সংযোজন করা হয়েছে তার সুস্পষ্ট তথ্যসূত্র বা রেফারেন্স উল্লেখ করার চেষ্টা করা হয়েছে। অর্থাৎ-

    আল কুরআনুল কারীম-এর ক্ষেত্রে-

    ক. সূরার পূর্ণ নাম

    খ. সূরার ধারাবাহিক নম্বর ও

    গ. আয়াত নম্বর

    সিহাহ সিত্তাহর হাদীস গ্রন্থের ক্ষেত্রে-

    ক. হাদীস গ্রন্থের পূর্ণ নাম

    খ. উল্লিখিত হাদীস যে অধ্যায়ে অন্তর্ভুক্ত সে অধ্যায়ের নাম

    গ. হাদীস নম্বর ও

    ঘ. উল্লিখিত হাদীস গ্রন্থটি বাংলাদেশের যে স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠান অনুবাদ করে ছাপিয়েছে সেই প্রতিষ্ঠানের নাম সংক্ষিপ্ত আকারে উপস্থাপন করা হয়েছে। যেমন : (ই.ফা) মানে- ইসলামিক ফাউন্ডেশন; (বিআইসি) মানে- বাংলাদেশ ইসলামিক সেন্টার; (আ.প্র) মানে- আধুনিক প্রকাশনী।

    এছাড়াও এ বইয়ের শেষে তথ্যসূত্র বা রেফারেন্স-এর আওতাধীনে আল কুরআনুল কারীম ও আল হাদীস গ্রন্থের যে সংখ্যাগুলো থেকে এ বইতে কুরআনের আয়াত ও হাদীস সংযোজন করা হয়েছে সেগুলোর ছাপা বছর বা সংস্করণ সাল, ছাপাকৃত প্রতিষ্ঠানের নাম বিস্তারিত সংযোজন করা হয়েছে। পুরো বই জুড়ে এমন কোনো আয়াত ও হাদীস খুঁজে পাওয়া যাবে না, যার পূর্ণাঙ্গ রেফারেন্স এ বইতে সংযোজন করা হয়নি। কেননা আমি মনে করি, যে দেশে যঈফ ও জাল হাদীস নামে সিরিজ বই পাওয়া যায়, সে দেশে পাঠকদের কাছে কোনো হাদীস পেশ বা উল্লেখ করা হলে তা অবশ্যই পরিপূর্ণ রেফারেন্স ভিত্তিক হওয়া উত্তম। আর সেই তাকিদ এবং যঈফ ও জাল হাদীসগুলোর প্রভাব থেকে পাঠকদেরকে মুক্ত রাখতেই এ বইতে পরিপূর্ণ রেফারেন্স ছাড়া কোনো হাদীস উল্লেখ করা হয়নি। সুতরাং এ বইতে উপস্থাপন করা কুরআনের আয়াত ও কোনো হাদীস নিয়ে শংকা বা সন্দেহ পোষণ করার কোনো সুযোগ আছে বলে মনে হয় না।

    মুহতারাম পাঠক, লেখক ও গবেষকদের দৃষ্টি আকর্র্ষণ

    সাম্প্রতিক সময়ে আমার লেখা যেসকল বই প্রকাশিত হয়েছে তাতে আল কুরআন ও আল হাদীসের রেফারেন্স যথাযথভাবে উল্লেখ করার চেষ্টা করা হয়েছে। অবশ্য রেফারেন্স বিভিন্ন লেখকের বইতে বিভিন্নভাবে দেয়া থাকে। ফলে কোনো রেফারেন্সটি তথ্যবহুল, অধিক গ্রহণযোগ্য, সকলের বোধগম্য, সঠিক ও নির্ভরশীল এবং প্রমাণযোগ্য তা নিয়ে রয়েছে অনেক প্রশ্ন; অনেক জিজ্ঞাসা। যেমন মনে করুন :

    ০১. আল কুরআনুল কারীম-এর আয়াতের রেফারেন্স অনেক লেখকের গ্রন্থে যেভাবে দেয়া থাকে সেগুলো হলো :

    (বাকারা, ০০) বা (সূরা বাকারা, ০০) বা (২ সূরা, ০০) বা (সূরা ২ বাকারা, ০০) বা (সূরা ২ আল বাকারা, ০০) বা (২ সূরা আল বাকারা, ০০) বা (সূরা আল বাকারা আয়াত, ০০) বা (আল কুরআন, ২/০০) বা (আল কুরআন, সূরা আল বাকারা, আয়াত, ০০) বা (কুরআন, সূরা বাকারা, আয়াত, ০০) বা (সূরা আল বাকারা, ২ : ০০) .......। এখানে ০০ বলতে আয়াত নম্বর বুঝানো হয়েছে।

    উপরে বিভিন্ন বইতে আল কুরআন-এর আয়াতের পাশে রেফারেন্স উল্লেখ করতে যেয়ে সাম্প্রতিক সময়ে যে পদ্ধতি অনুসরণ করা হয় তার কয়েকটি নমুনা উপস্থাপন করা হলো। এগুলোর মধ্যে কোনটি যথাযথ তথ্যবহুল ও তাৎপর্যপূর্ণ বা উচ্চ শিক্ষিত, কম শিক্ষিত, বাংলায় শিক্ষিত, আরবি শিক্ষায় শিক্ষিত বা ইংরেজি শিক্ষায় শিক্ষিত পাঠক, লেখক ও গবেষকদের জন্য সহজবোধ্য তা অবশ্য পাঠকরাই নির্বাচন করবেন।

    এ বিষয়ে আমি কোনো সিদ্ধান্ত দিতে চাচ্ছি না। তবে আমার লিখা ২০০৭ সালে প্রকাশিত একটি বইতে আল কুরআন এর আয়াতের পাশে রেফারেন্স উল্লেখ ছিলো (সূরা বাকারা, ০২ : ০০) ঠিক এভাবে। এটি দেখে এদেশের একজন বিশিষ্ট ইসলামী চিন্তাবিদ, লেখক ও গবেষক আমাকে প্রশ্ন করেছিলেন, জাবেদ মুহাম্মাদ শুধু সূরা বাকারা নামে আল কুরআন-এ কোনো সূরা আছে কী? আমি এ প্রশ্ন শুনে যখন স্তব্ধ! তখন তিনি আমাকে বললেন, আল কুরআন-এ সূরা বাকারা নামে কোনো সূরা নেই। যেভাবে আছে তার বাংলা উচ্চারণ লিখতে গেলে লিখতে হবে সূরা আল বাকারা। আমি এ কথা শুনে অত্যন্ত বিনয়ের সাথে মুহতারামকে তা সংশোধন করে নিবো বলে কথা দিলাম এবং সেদিন থেকে আমার পরবর্তী সকল লেখায় পবিত্র কুরআন-এ মহান স্রষ্টা আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা‘আলা এ সূরাগুলোর নাম যেভাবে উল্লেখ করেছেন ঠিক সেভাবেই সংযোজন করার চেষ্টা অব্যাহত রেখেছি।

    এছাড়াও আমাদের প্রিয় জন্মভূমি বাংলাদেশে আল কুরআন-এর বাংলায় অনুবাদ করেছে অনেকগুলো প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান। আর তাই আমাদের লিখা বইতে যে প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানের অনুবাদকৃত আল কুরআন-এর আয়াতের অর্থ উল্লেখ করা হয় সেটিও স্পষ্ট ভাষায় তথ্যসূত্র বা রেফারেন্সে উল্লেখ করা প্রয়োজন। সেইসাথে কততম সংস্করণ বা কত সালে প্রকাশিত হয়েছে তা উল্লেখ থাকা উত্তম।

    ০২. হাদীসের রেফারেন্স উল্লেখ করতে যেয়ে কেউ কেউ দিয়েছেন- (বুখারী), (তিরমিযী), (আবু দাউদ)....... ঠিক এভাবে এবং এতটুকু।

    উল্লিখিত পদ্ধতিতে রেফারেন্স পাওয়ার পর যে প্রশ্নগুলো পাঠক মনে আসা স্বাভাবিক

    তা হলো :

    ক. (বুখারী), (তিরমিযী), (আবু দাউদ), (ইবনে মাজাহ) বা... শুধু এই নামে কোনো হাদীস গ্রন্থ আছে কি?

    খ. যদি বুখারীর আগে-পরে কিছু থাকে এবং আছেও তাহলে সেটি দিয়ে পরিপূর্ণ ও পূর্ণাঙ্গ নামটি উল্লেখ করতে আপত্তি কোথায়? নাকি এভাবে পূর্ণ নাম লেখায় বইয়ের পৃষ্ঠা বৃদ্ধি পাবে এ চিন্তায় দিচ্ছেন না, নাকি নাম কাট-ছাট করে উচ্চারণ ও লিখাই অভ্যাস! কোনটি?

    গ. (বুখারী শরীফ), ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ কর্তৃক অনুবাদকৃত ১০টি খণ্ডে মোট হাদীস আছে ৭০৫৩টি, (সহীহ আল বুখারী), আধুনিক প্রকাশনী কর্তৃক অনুবাদকৃত ০৬টি খণ্ডে মোট হাদীস আছে ৭০৪২টি। আর অন্যান্য প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান থেকে অনুবাদকৃত হাদীসের সংখ্যা উল্লেখ না করে এখানে যদি শুধু ইসলামিক ফাউন্ডেশন কর্তৃক অনুবাদকৃত হাদীসের সংখ্যাটিই চিন্তা করি তাহলে যে হাদীসের পাশে রেফারেন্স সূত্র হিসেবে শুধু (বুখারী) এতটুকুই উল্লেখ আছে আর কিছুই নেই, তাতে পাঠকগণ কিভাবে এটি খুঁজে নিবে?

    ০৩. আবার কেউ কেউ তাঁদের বইতে রেফারেন্স সূত্র উল্লেখ করেছেন ঠিক এভাবে- (বুখারী ১/০০), (তিরমিযী ২/০০) বা ...। এখানেও ০২ নং পয়েন্টের উল্লিখিত প্রশ্নগুলো আসবে। তারপর আরো প্রশ্ন হলো :

    ক. ১/০০, ২/০০ বলতে যা বুঝানো হয়েছে তা সকল শ্রেণীর পাঠক বুঝবে কী?

    খ. ১/০০ বা ২/০০ দ্বারা যদি খণ্ড ও হাদীস নম্বর বুঝানো হয় তাহলে এটি কী মূল আরবি গ্রন্থের খণ্ড নাকি বাংলায় অনুবাদকৃত গ্রন্থের খণ্ড কোন্টি বুঝানো হয়েছে?

    গ. এবার যদি বাংলায় অনুবাদকৃত খণ্ড বুঝায়, তাহলে বুখারী শরীফ নামে ‘ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ’ কর্তৃক অনুবাদকৃত খণ্ড সংখ্যা ১০টি, সহীহ আল বুখারী নামে ‘আধুনিক প্রকাশনী’ কর্তৃক অনুবাদকৃত খণ্ড সংখ্যা ০৬টি। আরো কয়েকটি প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান কর্তৃক অনুবাদকৃত বুখারী শরীফ রয়েছে। সেগুলোরও খণ্ড সংখ্যায় গড়মিল রয়েছে। এ অবস্থায় উল্লিখিত রেফারেন্সে যে খণ্ড উল্লেখ করা হয়েছে, তাতো হুবহু ঐ খণ্ড হাতের কাছে না পাওয়া বা না জানা থাকার কারণে না মিলাতে পারাই স্বাভাবিক। তাহলে এভাবে খণ্ড উল্লেখ করা, না করারই নামান্তর নয় কি?

    ০৪. আবার কেউ কেউ তাদের বইতে হাদীসের রেফারেন্স দিয়ে থাকেন ঠিক এভাবে- (জামে আত তিরমিযী, পৃ. ৩২০, হাদীস নং-১৩৫৮); (সুনানু নাসাঈ, পৃ. ৬৮৩, হাদীস নং-৪৪৪৯) এখানেও পাঠক, লেখক ও গবেষকগণ যে সমস্যার মুখোমুখী হোন তা হলো :

    ক. জামে আত তিরমিযী, ‘বাংলাদেশ ইসলামিক সেন্টার’ কর্তৃক অনুবাদকৃত ও প্রকাশিত সিহাহ সিত্তাহর একটি হাদীস গ্রন্থের নাম। এর মোট ০৬টি খণ্ড। এতে মোট অনুবাদকৃত হাদীস সংখ্যা ৩৮৯০টি। যে হাদীসের রেফারেন্স হিসেবে জামে আত তিরমিযী, পৃ. ৩২০, হাদীস নং-১৩৫৮ উল্লেখ করা হয়েছে তার পৃষ্ঠা ও হাদীস নম্বর অনুসারে ‘বাংলাদেশ ইসলামিক সেন্টার’ কর্তৃক অনুবাদকৃত হাদীস গ্রন্থের ঐ পৃষ্ঠায় ১৩৫৮ নং হাদীসের সাথে এর কোনো মিল নেই।

    এবার তিরমিযী শরীফ, ‘ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ’ কর্তৃক অনুবাদকৃত ও প্রকাশিত হাদীস গ্রন্থের নাম, এ নামে তাদের খণ্ড রয়েছে ০৬টি। এতে মোট অনুবাদকৃত হাদীস সংখ্যা ৪৩৫৪টি। ফলে এর সাথেও উল্লিখিত হাদীস গ্রন্থের পৃষ্ঠা ও হাদীস নম্বরের পাশে যে হাদীস বর্ণিত হয়েছে তার কোনো মিল নেই।

    এবার (সুনানু নাসাঈ, পৃ. ৬৮৩, হাদীস নং ৪৪৪৯) এখানে ‘ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ’ কর্তৃক অনুবাদকৃত ‘সুনানু নাসাঈ শরীফ’ হাদীস গ্রন্থের সাথে এর কোনো মিল নেই; তাহলে এই রেফারেন্স-এ কোন্ প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানের অনুবাদকৃত হাদীস গ্রন্থটি অনুসরণ করা হয়েছে তা উল্লেখ না থাকায় এটিকে গ্রহণযোগ্য রেফারেন্স মনে করা যাচ্ছে কিনা সেই প্রশ্নটি থেকেই যাচ্ছে।

    খ. আসলে রেফারেন্স মানে কী? কেন দেয়া হচ্ছে? এটি কী পাঠকদেরকে শুধু আইওয়াশ করার জন্য দেয়া; নাকি দিতে হবে এজন্য দেয়া; নাকি হাদীস ও হাদীসের অনুবাদ সংক্রান্ত বিভ্রান্তি এবং যঈফ ও জাল হাদীস থেকে মুক্ত থাকার জন্যে দেয়া- এ বিষয়টিও উল্লিখিত রেফারেন্স-এর ধরন ও নমুনা দেখে প্রশ্ন তোলা স্বাভাবিক। যদি রেফারেন্স দিতে হবে তাই দিলাম, পাঠককে বুঝালাম রেফারেন্স দিচ্ছি, আছে তাহলে কোনো সমস্যা নেই। আর যদি মনে করা হয় যে, সত্যিকার অর্থেই নির্ভুল হাদীস প্রমাণ করে তা পাঠকদের জীবনে প্রভাব বিস্তার করুক সেটি চাই, তাহলে তা যথাযথ রেফারেন্স দিয়ে স্পষ্ট ভাষায় উল্লেখ করা উত্তম। কেননা হাদীসের যে বিকৃতি ঘটেছে, অনেকের মনগড়া কথা মিলিয়ে যে হাদীস হিসেবে বলার অপচেষ্টা করা হচ্ছে তাতো হাদীস গবেষক ও বিশারদগণ মাত্রই জানা। তাই আমাদের এ ব্যাপারে সচেতন হওয়া উত্তম নয় কি?

    ০৪. আবার কোনো কোনো লেখক বইতে রেফারেন্স দিয়েছেন (সহীহ আল বুখারী, হাদীস-০০ [ই.ফা], (সুনানু আবু দাউদ, হাদীস-০০ [ই.ফা]), (জামে আত তিরমিযী, হাদীস-০০ [ই.ফা])।

    এ পদ্ধতিতেও কতিপয় প্রশ্ন জাগে, তা হলো :

    ক. (সহীহ আল বুখারী), (সুনানু আবু দাউদ) ও (জামে আত তিরমিযী) নামে হুবহু ইসলামিক ফাউন্ডেশন কর্তৃক অনুবাদকৃত কোনো হাদীস গ্রন্থ আছে কী? বরং ইসলামিক ফাউন্ডেশন কর্তৃক উল্লিখিত হাদীস গ্রন্থের হুবহু নাম হলো পর্যায়ক্রমে (বুখারী শরীফ), (আবু দাঊদ শরীফ), (তিরমিযী শরীফ)। কাজেই এ দিকে খেয়াল না রেখে মুখস্থ রেফারেন্স দেয়া কতটুকু সমীচীন একটু ভেবে দেখা দরকার!

    ০৫. আবার কোনো কোনো লেখক রেফারেন্স সূত্র বা তথ্য সূত্র হিসেবে হাদীসের পাশে উল্লেখ করে থাকেন, (বুখারী, মিশকাত/০০) বা (মিশকাত শরীফ, ০০) বা (বুখারী, মিশকাত শরীফ).......।

    এভাবে রেফারেন্স প্রাপ্তির পর যে প্রশ্নগুলোর উদ্ভব হয় তা হলো :

    ক. মিশকাত শরীফ সিহাহ সিত্তাহর অন্তর্ভুক্ত কোনো হাদীস গ্রন্থ কিনা?

    খ. মিশকাত শরীফ অবশ্যই একটি ভাল মানের সমন্বিত হাদীস গ্রন্থ। কিন্তু মূল অনুবাদকৃত গ্রন্থকে বাদ দিয়ে মিশকাত শরীফে বাছাইকৃত কয়েক হাজার হাদীসের প্রতি সকলকে আকৃষ্ট করা কতটুকু ঠিক হচ্ছে তা অবশ্য চিন্তার দাবি রাখে। অন্যদিকে আমরা যদি সিহাহ সিত্তাহর ছয়টি বিশুদ্ধ হাদীস গ্রন্থের প্রতি সকলকে আকৃষ্ট করতে পারি তাইতো বোধহয় উত্তম হয়। তাছাড়া আজকাল অনেক লেখক তাদের বইতে হাদীসের রেফারেন্স মিশকাত উল্লেখ করায় পাঠকগণ মিশকাত শরীফকে সিহাহ সিত্তাহর ছয়টি হাদীস গ্রন্থের একটি ভাবতে শুরু করেছে। যা বিভ্রান্তি এবং দু:খজনক। যাহোক এতসব কারণ ও প্রশ্নের ছড়াছড়ির ফলেই আমি এ বিষয়টি নিয়ে কিছু কথা লিখলাম। উদ্দেশ্য রেফারেন্স উল্লেখ করার ক্ষেত্রে আমার নিজের সচেতনতা আনয়ন’ আমার নিজের সংশোধন আর পাশাপাশি হয়তো হতে পারে তা অন্যদেরও প্রয়োজন। কিন্তু এ লেখার দ্বারা কোনো লেখকের সমালোচনা বা মিশকাত শরীফসহ কোনো গ্রন্থকে কোণঠাসা করা আমার উদ্দেশ্য নয়। বরং আমার অগ্রজ লেখক, গবেষকদের প্রতি আমি আন্তরিকভাবে শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করে মহান স্রষ্টার কাছে তাদের লেখার কবুলিয়াত এবং উত্তম পুরস্কার কামনা করছি। আর আমিসহ সকলেই যেন আগামীতে সঠিক, নির্ভরশীল এবং প্রমাণযোগ্য রেফারেন্স ভিত্তিক লেখা উপহার দিতে পারি সেজন্য সকলের কাছে দু‘আ কামনা করছি।

    পাশাপাশি সকল পাঠকদের প্রতি সমমর্যাদা জ্ঞাপন করে আমার লেখা সাম্প্রতিক বইগুলোতে পূর্ণাঙ্গ ও সকলের বোধগম্য রেফারেন্স উল্লেখ করতে চেষ্টা করেছি। তারপরও যদি আমার বইতে দেয়া আল কুরআন-এর আয়াত ও হাদীসের রেফারেন্স-এ কোনো সমস্যা বা জিজ্ঞাসা পাঠকদের মনে আসে বা এ সংক্রান্ত কোনো পরামর্শ পাঠক, লেখক ও গবেষকদের পক্ষ থেকে আসে তাহলে তা জানালে ইনশাআল্লাহ পরবর্তী সংস্করণে তা সংযোজন করা হবে।

    এ গেল রেফারেন্স সংক্রান্ত বিভ্রান্তি নিরসন। এবার আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চাই। সেটি হলো:

    আমাদের প্রিয় নবী ও রাসূল হযরত মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নামের শেষে (সাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এই দুরূদটি কোনো কোনো লেখক তাদের বইতে সংক্ষিপ্ত করে (সা:) বা (সা) বা (সা.) বা (স.) বা (স) বা (ছ.) ইত্যাদি

    বিভিন্ন পদ্ধতিতে উপস্থাপন করেন। কিন্তু এগুলোর মধ্যে কোনটি সঠিক, আর কোনটি সঠিক নয়, নাকি সবগুলো পদ্ধতিই সঠিক; নাকি সবগুলো পদ্ধতিই বেঠিক। এ বিষয়েও কোনো বিতর্কে না জড়িয়ে শুধু বলবো, (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর সংক্ষিপ্ত রূপ কেউ যদি লিখতেই চায় তাহলে হয়তো (সা.) এভাবে লিখা যেতে পারে। অবশ্য এটি না লিখে পুরো দুরূদটিই লিখা উত্তম। মহান স্রষ্টা আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা‘আলা আমাদের উত্তম পদ্ধতি গ্রহণ করার তৌফিক দান করুন। আমীন।

    আজকের ছেলে-মেয়েরাই আগামীর সম্পদ!

    ছেলে-মেয়েরা পিতা-মাতার সম্পদ, দেশের সম্পদ, সমগ্র বিশ্বের সম্পদ। তাই তাদের সুন্দর জীবন গঠন সকলেরই কাম্য। আমি মনে করি একশত বিঘা জমি, ঢাকার বুকে পাঁচটি বাড়ি, মার্সিডিজ গাড়ি, আর কোটি টাকা ব্যাংকে জমা করে রেখে যাওয়ার চাইতে ছেলে-মেয়েদের পড়ালেখা ও আদর্শ জীবন গড়ে যাওয়া উত্তম। কেননা উল্লিখিত সম্পদগুলো ছেলে-মেয়েদের দেয়া হলে আর পড়ালেখা ও আদর্শ মানুষ হিসেবে গড়ে যেতে না পারলে কতিপয় ব্যতিক্রম ছাড়া যা দেখা যায় তাতে জমি পেয়ে ওরা কৃষক হবে, বাড়ি পেয়ে কে কোনটা নিবে তা নিয়ে মারামারি করবে, গাড়ি নিয়ে এদিক-সেদিক ছুটাছুটি করবে আর কোটি টাকা ভাগাভাগি করে নিয়ে হয়তো অনাদর্শিক পথে ব্যয় করবে। তাতে পিতা-মাতার দুনিয়াতে যেমন অপমৃত্যু ঘটবে তেমনি আখিরাতেও শাস্তির মুখোমুখি দাঁড়াতে হবে। এজন্যেই ছেলে-মেয়েদের পড়ালেখা ও আদর্শ জীবন গড়তে আদর্শ পরিবেশ ও আদর্শিক উপকরণ উপহার দেয়ার পাশাপাশি পিতা-মাতাকেও আদর্শিক হতে হবে। কেননা আম গাছে আম, জাম গাছে জাম- এ যেন প্রকৃতির নিয়মের বিধান। সুতরাং শৈশবকাল থেকেই ছেলে-মেয়েদের প্রতিটি মুহূর্ত যেন আদর্শ শিক্ষামুখর হয় সেদিকে দৃষ্টি রাখা পিতা-মাতার দায়িত্ব ও কর্তব্য। তবেই আশা করা যায়, ছেলে-মেয়েরা পিতা-মাতার মুখ উজ্জ্বল করতে সক্ষম হবে। পরিগণিত হবে দেশের সম্পদে এবং মৃত্যুর পূর্ব মুহূর্ত পর্যন্ত মানবতার কল্যাণে দায়িত্ব পালন করতে সক্ষম হবে।

    প্রিয় পাঠক

    আমি আপনাদের মেধা, সময় ও কষ্টার্জিত অর্থের ব্যাপারে অত্যন্ত যত্নশীল। ফলে নামের সাথে সূচিপত্রের শতভাগ সমন্বয় ঘটিয়ে আমি আপনাদের হাতে একটি সুন্দর গঠনমূলক বই উপহার দিতে চেষ্টা করেছি। কাজেই এ বইটি আপনারা ক্রয় করে নিতে পারেন। তাছাড়া আমি কোনো বই লিখে বিক্রিত মুনাফা দিয়ে রাজধানীর বুকে বাড়ি-গাড়ি করতে চাই না। আমি যা চাই তা হলো- এ বই পাঠ করে যেমন আজকের পিতা-মাতারা তাদের নিজেদের দিকে তাকাবেন, নিজেদেরকে আদর্শিক চিন্তা-চেতনার সাথে সম্পৃক্ত করবেন। তেমনি ছেলে-মেয়েদের কাছেও তা প্রত্যাশা করবেন; যাতে তারাও আগামীতে তাদের ছেলে-মেয়েদের কথা মাথায় রেখে নিজেদেরকে আদর্শিক পথে শামিল রাখবে। এভাবে বংশ পরম্পরায় পরিবার, সমাজ, দেশ ও জাতি আদর্শ মানুষ উপহার পাবে। বাংলাদেশ হবে বিশ্বের মানচিত্রে একটি আদর্শিক দেশ। আর সে লক্ষ্যেই রচিত এ বইতে কোথাও কোনো ভুল-ত্রুটি দেখা গেলে তা পরবর্তী সংস্করণে দূর করার আশ্বাস দিয়ে এখানেই শেষ করছি। আল্লাহ হাফিজ।

    মা‘আস সালাম

    জাবেদ মুহাম্মাদ

    প্যারেন্টিং

    Parenting ইংরেজী শব্দ। এর প্রতিশব্দ Child rearing. বাংলায় যার অর্থ সন্তান প্রতিপালন। এখানে Parenting বা এই Concept সম্পর্কে বিভিন্ন Dictionary তে বর্ণিত সংজ্ঞাগুলো হলো :

    1. Parenting means the rearing of children. It includes the methods, techniques which required in the rearing of children.

    2. Parenting means the process of taking care of children until they are old enough to take care of themselves: the things that parents do to raise a child.

    3. Parenting means:

    A. the raising of a child by its parents;

    Enjoying the preview?
    Page 1 of 1