Discover millions of ebooks, audiobooks, and so much more with a free trial

Only $11.99/month after trial. Cancel anytime.

সবর একটি মহৎ গুণ / Sobor Akti Mohat Gun (Bengali)
সবর একটি মহৎ গুণ / Sobor Akti Mohat Gun (Bengali)
সবর একটি মহৎ গুণ / Sobor Akti Mohat Gun (Bengali)
Ebook246 pages1 hour

সবর একটি মহৎ গুণ / Sobor Akti Mohat Gun (Bengali)

Rating: 4 out of 5 stars

4/5

()

Read preview

About this ebook

নিজ দায়িত্বে আত্মোনিয়োগ, মনোবল অুক্ষুণ্ন ও কর্ম চঞ্চলতার জন্য ধৈর্য অপরিহার্য। কেউ সাফল্য বিচ্যুত হলে, বুঝতে হবে ধৈর্য ও সহিষ্ণুতার অভাব রয়েছে তার মধ্যে। কারণ ধৈর্যের মতো শক্তিশালী চাবির মাধ্যমে সাফল্যের সমস্ত বদ্ধ কপাট উন্মুক্ত হয়। পাহাড়সম বাধার সম্মুখেও কর্মমুখরতা চলমান থাকে। মানব জাতির জীবন প্রবাহের পদে পদে ধৈর্যের অপরিহার্যতা অনস্বীকার্য বিধায় এ নিবন্ধের সূচনা। কেন ধৈর্যধারণ করব? কি তার ফল? কিভাবে ধৈর্যধারণ করব? কি তার পদ্ধতি? ইত্যাদি বিষয়ের উপর আলোচনা উপস্থাপন করা হলো যা প্রতিটি মুসলিম নর-নারীর বিশেষ উপকারে আসবে বলে আমাদের বিশ্বাস। মুসিবত আর প্রতিকূলতায় নিত্যদিনের মত স্বাভাবিক জীবন উপহার দিবে। শোককে শক্তিতে পরিণত করে এগিয়ে যাবে সাফল্যমণ্ডিত জীবন লাভে।

LanguageBengali
Release dateMar 30, 2015
ISBN9781310771026
সবর একটি মহৎ গুণ / Sobor Akti Mohat Gun (Bengali)
Author

ড. মোহাম্মদ হারুন রশিদ Dr. Muhammad Harun Rashid

উপপরিচালক বাংলা একাডেমি, ঢাকা

Related categories

Reviews for সবর একটি মহৎ গুণ / Sobor Akti Mohat Gun (Bengali)

Rating: 4 out of 5 stars
4/5

3 ratings0 reviews

What did you think?

Tap to rate

Review must be at least 10 words

    Book preview

    সবর একটি মহৎ গুণ / Sobor Akti Mohat Gun (Bengali) - ড. মোহাম্মদ হারুন রশিদ Dr. Muhammad Harun Rashid

    ভূমিকা

    পৃথিবীতে এমন কোন ব্যক্তি নেই যে পিতা-মাতা, ছেলে-মেয়ে, ভাই-বোন, বন্ধু-বান্ধব, প্রিয়জন কিংবা কোন নিকটাত্মীয়ের মৃত্যুতে শোকাহত হয়নি, চক্ষুদ্বয় অশ্রু বিসর্জন করেনি; ভর দুপুরেও গোটা পৃথিবী ঝাপসা হয়ে আসেনি; সুদীর্ঘ, সুপ্রশস্ত পথ সরু ও সংকীর্ণ হয়ে যায়নি; ভরা যৌবন সত্ত্বেও সুস্থ দেহ নিশ্চল হয়ে পড়েনি; অনিচ্ছা সত্ত্বেও অপ্রতিরোধ্য ক্রন্দন ধ্বনি তুলতে তুলতে গলা শুকিয়ে আসেনি; অবিশ্বাস সত্ত্বেও মর্মন্তুদ কঠিন বাস্তবতা মেনে নিতে বাধ্য হয়নি; এই বুঝি চলে গেল, চিরদিনের জন্য; আর কোন দিন ফিরে আসবে না; কোন দিন তার সাথে দেখা হবে না; শত আফসোস ঠিকরে পড়ে, কেন তাকে কষ্ট দিয়েছি; কেন তার বাসনা পূর্ণ করিনি; কেন তার সাথে রাগ করেছি; কেন তার থেকে প্রতিশোধ নিয়েছি। আরো কত ভয়াবহ স্মৃতির তাড়না তাড়িয়ে বেড়ায়, শোকাতুর করে, কাঁদায়। কত ভর্ৎসনা থেমে থেমে হৃদয়ে অস্বস্তির জন্ম দেয়, কম্পনের সূচনা করে অন্তরাত্মায়। পুন:পুন একই অভিব্যক্তি আন্দোলিত হয়- মুখের ভাষা যা ব্যক্ত করতে অক্ষম। হাতের কলম যা লিখতে অপারগ।

    হ্যাঁ, এ কঠিনতম মুহূর্ত, হতাশাময় পরিস্থিতি থেকে মুক্ত করে শক্তি, সাহস ও সুদৃঢ় মনোবল উপহার দেয়ার মানসে আমাদের এ প্রয়াস। আমরা মুসলমান। আমাদের রব আল্লাহ। আমাদের পছন্দনীয় ধর্ম ইসলাম। আমাদের একমাত্র আদর্শ মুহম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম। তারাই আত্মতৃপ্তি লাভের যোগ্যপাত্র। পক্ষান্তরে কাফেরদের জীবন সংকীর্ণ, তারা হতাশাগ্রস্ত, তারা এ তৃপ্তি লাভের অনুপযুক্ত। কারণ, আল্লাহ মু’মিনদের অভিভাবক, কাফেরদের কোনো অভিভাবক নেই। বিশ্বনবী মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পার্থিব জগতে মু’মিনদের অবস্থার একটি উদাহরণ পেশ করেছেন। এ প্রসঙ্গে অনেক হাদীস বর্ণিত আছে। তন্মধ্যে কয়েকটি হলো, আবূ হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত :

    عَنْ أَبِىْ هُرَيْرَةَ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ -صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ- « مَثَلُ الْمُؤْمِنِ كَمَثَلِ الزَّرْعِ لاَ تَزَالُ الرِّيْحُ تُمِيْلُهُ وَلاَ يَزَالُ الْمُؤْمِنُ يُصِيْبُهُ الْبَلاَءُ وَمَثَلُ الْمُنَافِقِ كَمَثَلِ شَجَرَةِ الأَرْزِ لاَ تَهْتَزُّ حَتّى تَسْتَحْصِدَ.

    একজন মু’মিনের উদাহরণ একটি শস্যের মত, থেকে থেকে বাতাস তাকে দোলায়। তদ্রুপ একের পর এক মুসিবত অবিরাম অস্থির করে রাখে মু’মিনকে। পক্ষান্তরে একজন মুনাফিকের উদাহরণ একটি দেবদারু বৃক্ষের ন্যায়, দুলে না, কাত হয়েও পড়ে না, যাবৎ-না শিকড় থেকে সমূলে উপড়ে ফেলা হয় তাকে। [1]

    আবূ হুরায়রা (রা.)-র সূত্রে বর্ণিত আরেকটি উদাহরণে আছে :

    عَنْ أَبِىْ هُرَيْرَةَ–رَضِىَ اللهُ عَنْهُ–أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ–صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ–قَالَ « مَثَلُ الْمُؤْمِنِ كَمَثَلِ خَامَةِ الزَّرْعِ، يَفِىءُ وَرَقُهُ مِنْ حَيْثُ أَتَتْهَا الرِّيْحُ تُكَفِّئُهَا ، فَإِذَا سَكَنَتِ اعْتَدَلَتْ، وَكَذلِكَ الْمُؤْمِنُ يُكَفَّأُ بِالْبَلاَءِ ، وَمَثَلُ الْكَافِرِ كَمَثَلِ الأَرْزَةِ صَمَّاءَ مُعْتَدِلَةً حَتّى يَقْصِمَهَا اللهُ إِذَا شَاءَ.

    ঈমানদার ব্যক্তির উদাহরণ শস্যের নরম ডগার ন্যায়, বাতাস যে দিকেই বয়ে চলে, সেদিকেই তার পত্র-পল্লব ঝুঁকে পড়ে। বাতাস যখন থেমে যায়, সেও স্থির হয়ে দাঁড়ায়। ঈমানদারগণ বালা-মুসিবত দ্বারা এভাবেই পরীক্ষিত হন। কাফেরদের উদাহরণ দেবদারু (শক্ত পাইন) বৃক্ষের ন্যায়, যা একেবারেই কঠিন ও সোজা হয়। আল্লাহ যখন ইচ্ছা করেন, তা মূলসহ উপড়ে ফেলেন। [2]

    শস্যের শিকড় মাটি আঁকড়ে ধরে। তার সাথে একাকার হয়ে যায়। যদিও বাতাস শস্যকে এদিক-সেদিক দোলায়মান রাখে। কিন্তু ছুঁড়ে মারতে, টুকরা করতে বা নীচে ফেলে দিতে পারে না। তদ্রুপ মুসিবত যদিও মু’মিনকে কান্ত, ঘর্মাক্ত ও চিন্তামগ্ন রাখে, কিন্তু সে তাকে হতবিহ্বল, নিরাশ কিংবা পরাস্ত করতে পারে না। কারণ, আল্লাহর প্রতি দৃঢ় বিশ্বাস তাকে প্রেরণা দেয়, তার মধ্যে শক্তি সঞ্চার করে, সর্বোপরি তাকে হেফাজত করে। এ পার্থিব জগৎ দু:খ-বেদনা, দুর্যোগ-দুর্ঘটনা, সংহার ও জীবন নাশকতায় পরিপূর্ণ। এক সময় প্রিয়জনকে পাওয়ার আনন্দ হয়, আরেক সময় তাকে হারানোর দু:খ। হর্ষ-উৎফুল্ল ব্যক্তির ক্রন্দন করা, সচ্ছল ব্যক্তির অভাবগ্রস্ত হওয়া এবং সুখী ব্যক্তির দু:খিত হওয়া নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনা। এ হলো দুনিয়া ও তার অবস্থা। প্রকৃত মু’মিনের এতে ধৈর্যধারণ বৈ উপায় নেই। বরং এতেই রয়েছে দুনিয়ার উত্থান-পতনের নিরাময় তথা উত্তম প্রতিষেধক। অন্য এক রেওয়ায়েতে এসেছে, সুহাইব রা. থেকে বর্ণিত,

    তিনি বলেন :

    عَنْ صُهَيْبٍ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ -صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ- « عَجَبًا لأَمْرِ الْمُؤْمِنِ إِنَّ أَمْرَهُ كُلَّهُ خَيْرٌ وَلَيْسَ ذَاكَ لأَحَدٍ إِلاَّ لِلْمُؤْمِنِ إِنْ أَصَابَتْهُ سَرَّاءُ شَكَرَ فَكَانَ خَيْرًا لَّهُ وَإِنْ أَصَابَتْهُ ضَرَّاءُ صَبَرَ فَكَانَ خَيْرًا لَّهُ.

    মু’মিনের ব্যাপারটি চমৎকার, নেয়ামত অর্জিত হলে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে, যা তার জন্য মঙ্গলজনক এতে কৃতজ্ঞতার সওয়াব অর্জিত হয়। মুসিবতে পতিত হলে ধৈর্যধারণ করে, তাও তার জন্য কল্যাণকর এতে ধৈর্যের সওয়াব লাভ হয়। [3]

    আল্লাহ তা‘আলা আমাদের ধৈর্যধারণের নির্দেশ দিয়েছেন এবং একে তার সাহায্য ও সান্নিধ্য লাভের উপায় ঘোষণা করেছেন। এরশাদ হচ্ছে :

    ياَيُّهَا الَّذِيْنَ آمَنُوا اسْتَعِيْنُوْا بِالصَّبْرِ وَالصَّلاَةِ ط إِنَّ اللهَ مَعَ الصَّابِرِيْنَ.

    হে মু’মিনগণ, ধৈর্য ও সালাতের মাধ্যমে সাহায্য চাও। নিশ্চয় আল্লাহ ধৈর্যশীলদের সাথে আছেন। [4]

    পবিত্র কুরআনের অনেক স্থানে আল্লাহ নেককারদের সাথে আছেন, ধৈর্যশীলদের সাথে আছেন ইত্যাদি বলা হয়েছে। তিনি আরশের উপর থেকেও বান্দাকে সাহায্য সহযোগিতা করার মাধ্যমে তার সাথে রয়েছেন বলে বুঝে নিতে হবে। আরো বিশেষভাবে জানিয়ে দিয়েছেন পার্থিব জীবন একটি পরীক্ষাগার, আমি তোমাদেরকে ভয়-ভীতি, ক্ষুধা-দারিদ্র্য, ধন-সম্পদ, জনবল ও ফল-মূলের স্বল্পতার মাধ্যমে পরীক্ষা করব। হে রাসূল! আপনি ধৈর্যশীলদের সুসংবাদ দিন। এরশাদ হচ্ছে :

    وَلَنَبْلُوَنَّكُمْ بِشَيْءٍ مِّنَ الْخَوْفِ وَالْجُوْعِ وَنَقْصٍ مِنَ الأَمْوَالِ وَالأَنْفُسِ وَالثَّمَرَاتِ ط وَبَشِّرِ الصَّابِرِيْنَ لا الَّذِيْنَ إِذَآ أَصَابَتْهُمْ مُّصِيْبَةٌ لا قَالُوْآ إِنَّا لِلّهِ وَإِنَّآ إِلَيْهِ رَاجِعُوْنَ. أُولئِكَ عَلَيْهِمْ صَلَوَاتٌ مِّنْ رَبِّهِمْ وَرَحْمَةٌقف وَأُولئِكَ هُمُ الْمُهْتَدُوْنَ.

    আর আমি অবশ্যই তোমাদেরকে পরীক্ষা করব কিছু ভয়, ক্ষুধা এবং জান-মাল ও ফল-ফলাদির স্বল্পতার মাধ্যমে। আর তুমি ধৈর্যশীলদের সুসংবাদ দাও। যারা, তাদেরকে যখন বিপদ আক্রান্ত করে তখন বলে, নিশ্চয় আমরা আল্লাহর জন্য এবং নিশ্চয় আমরা তাঁর দিকে প্রত্যাবর্তনকারী। তাদের উপরই রয়েছে তাদের রবের পক্ষ থেকে মাগফিরাত ও রহমত এবং তারাই হিদায়াতপ্রাপ্ত। [5]

    বস্তুত নিজ দায়িত্বে আত্মোনিয়োগ, মনোবল অক্ষুন্ন ও কর্ম চঞ্চলতার জন্য ধৈর্য অপরিহার্য। কেউ সাফল্য বিচ্যুত হলে, বুঝতে হবে ধৈর্য ও সহিষ্ণুতার অভাব রয়েছে তার মধ্যে। কারণ ধৈর্যের মতো শক্তিশালী চাবির মাধ্যমে সাফল্যের সমস্ত বদ্ধ কপাট উন্মুক্ত হয়। পাহাড়সম বাধার সম্মুখেও কর্মমুখরতা চলমান থাকে। মানব জাতির জীবন প্রবাহের পদে পদে ধৈর্যের অপরিহার্যতা অনস্বীকার্য বিধায় এ নিবন্ধের সূচনা। কেন ধৈর্যধারণ করব? কি তার ফল? কিভাবে ধৈর্যধারণ করব? কি তার পদ্ধতি? ইত্যাদি বিষয়ের উপর আলোচনা উপস্থাপন করা হলো যা প্রতিটি মুসলিম নর-নারীর বিশেষ উপকারে আসবে বলে আমাদের বিশ্বাস। মুসিবত আর প্রতিকূলতায় নিত্যদিনের মত স্বাভাবিক জীবন উপহার দিবে। শোককে শক্তিতে পরিণত করে এগিয়ে যাবে সাফল্যমণ্ডিত জীবন লাভে।

    ড. মোহাম্মদ হারুন রশিদ ও মুহাম্মদ শাহিদুল ইসলাম

    1 মুসলিম ইব্ন হাজ্জাজ ইব্ন মুসলিম আল-কুশাইরী, আস-সহীহ, (কায়রো : মাকাতাবাহ আল-কুদসী, ১৩৬৭ হি.), ১৩খণ্ড, পৃ. ৪১৬, হাদীস নং-৫০২৪।

    2 বুখারী, আবু ‘আব্দিল্লাহ্ ইসমাঈল ইব্ন মুগীরাহ, আল-জামি‘উস সহীহ, (বৈরূত : দারু ইব্ন কাছীর, ১৪০৭ হি.), ২২খণ্ড, পৃ. ৪৮১, হাদীস নং-৬৯১২।

    3 মুসলিম, আস-সহীহ, প্রাগুক্ত, ১৪ খণ্ড, পৃ. ২৮০, হাদীস নং- ৫৩১৮; ইব্ন হিব্বান, আস-সহীহ, (দারুল ফিক্র, তা.বি.), ১২ খণ্ড, পৃ. ২৮১, হাদীস নং-২৯৫৮।

    4 সূরা আল-বাকারা : ১৫৩।

    5 আল-কুরআন, সূরা আল-বাকারা : ১৫৫-১৫৭।

    প্রথম অধ্যায় : সবর (ধৈর্য) পরিচিতি, প্রকার ও গুরুত্ব

    প্রথম পরিচ্ছেদ : সবর বা ধৈর্যের সংজ্ঞা

    ধৈর্য শব্দটির আরবী প্রতিশব্দ হলো ‘সবর’। যার আভিধানিক অর্থ হলো আটকে রাখা, বাধা দেয়া বা বিরত রাখা।

    পরিভাষায় তিনটি বিষয়ে নিজেকে আটকে রাখার নাম সবর বা ধৈর্য।

    প্রথম বিষয় : আল্লাহ তা‘আলার আদেশ-নির্দেশ পালনে নিজেকে আটকে রাখা।

    দ্বিতীয় বিষয় : আল্লাহ তা‘আলা যা নিষেধ করেছেন তার দিকে যেতে নিজেকে আটকে রাখা বা বিরত রাখা।

    তৃতীয় বিষয় : যে সকল বিপদ-আপদ আসবে সে সকল ব্যাপারে অসঙ্গত ও অনর্থক বা ক্ষতিকর প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করা থেকে নিজেকে আটকে রাখা।

    কারো কারো মতে, এটি হলো মানুষের ভেতরগত একটি উত্তম স্বভাব, যার মাধ্যমে সে অসুন্দর ও অনুত্তম কাজ থেকে বিরত থাকে। এটি মানুষের এক আত্মিক শক্তি যা দিয়ে সে নিজেকে সুস্থ ও সুরক্ষিত রাখতে পারে।

    জুনায়েদ বাগদাদী (রহ.) বলেছেন : হাসিমুখে তিক্ততার ঢোক গেলাই হলো ধৈর্য।

    জুন্নুন মিসরী (রহ.) বলেন : আল্লাহর বিরুদ্ধাচরণ থেকে দূরে থাকা, বিপদের সময় শান্ত থাকা এবং জীবনের কুরুক্ষেত্রে দারিদ্র্যের কষাঘাত সত্ত্বেও অমুখাপেক্ষিতা প্রকাশ করাই হলো ধৈর্য।

    দ্বিতীয় পরিচ্ছেদ : সবরের প্রকার

    ধৈর্য বা সবর তিন প্রকার। যথা

    প্রথম : আল্লাহ্ তা‘আলার আদেশ-নির্দেশ পালন ও ইবাদত-বন্দেগী সম্পাদন করতে যেয়ে ধৈর্যধারণ করা।

    দ্বিতীয় : আল্লাহ তা‘আলার নিষেধ এবং তার বিরুদ্ধাচরণ থেকে বিরত থাকার ক্ষেত্রে অটুট ধৈর্য রাখা।

    তৃতীয় : তাকদীর ও ভাগ্যের ভালো-মন্দে অসন্তুষ্ট না হয়ে ধৈর্যধারণ করা।

    আল-কুরআনে বর্ণিত লুকমান ‘আলাইহিস্ সালামের বিখ্যাত উপদেশেও এ তিনটি বিষয়ের কথা একত্রে বলা হয়েছে।

    يَا بُنَيَّ أَقِمِ الصَّلاَةَ وَأْمُرْ بِالْمَعْرُوْفِ وَانْهَ عَنِ الْمُنْكَرِ وَاصْبِرْ عَلَى مَآ أَصَابَكَ ط إِنَّ ذلِكَ مِنْ عَزْمِ الأُمُوْرِ.

    "হে আমার প্রিয় বৎস! সালাত কায়েম কর, সৎকাজের আদেশ দাও, অসৎকাজে নিষেধ কর এবং তোমার ওপর যে বিপদ আসে তাতে ধৈর্য ধর। নিশ্চয়ই এগুলো অন্যতম দৃঢ় সংকল্পের কাজ। [6]

    লুকমান আলাইহিস সালাম যে সৎকাজের আদেশ দাও বলেছেন : তার মধ্যে নিজে সৎকাজ করা এবং অপরকে সৎকাজের

    Enjoying the preview?
    Page 1 of 1