ছাত্রজীবনে ইসলামের দাবী / Chhatro jibone islamer dabi (Bengali)
()
About this ebook
একটি ছোট্ট শিশুর কাছে মূল্যবান কোন রত্নও নিছক খেলনা মাত্র, কারণ ঐ জিনিসের গুরুত্ব তার কাছে বোধগম্য নয় যে। কারণে সে মূল্যবান রত্ন দিয়ে কিছুক্ষণ খেলা করে হয়তো ফেলে দেবে অবহেলায়, কিংবা কোন চালাক লোক হয়তো চকলেট কিংবা অন্য কোন খেলনা দিয়ে ভুলিয়ে ভালিয়ে তার কাছ থেকে নিয়ে নেবে দামী রত্নটি। বস্তুত, দামী জিনিসের দাম যারা বুঝে না তারা সে জিনিস নিজের কাছে বেশিক্ষণ রাখতে পারে না, আবার যারা ঐ জিনিসের গুরুত্ব বুঝে তারা সেটি নিজের অধিকারে নেয়ার চেষ্টা করে থাকে।
ছাত্রজীবন যে কত মূল্যবান, তাদের এই সময়টা যে কত গুরুত্বপূর্ণ তা তারা নিজেরাই অনেক সময় বুঝতে পারে না। আর এই না বুঝার কারণেই তারা অত্যন্ত অবহেলায় তাদের এই মূল্যবান সময়কে নষ্ট করে। এজন্য অবশ্য শুধু ছাত্রদেরকেও একতরফা দোষ দিয়ে লাভ নেই, কারণ আমাদের প্রচলিত শিক্ষা ব্যবস্থা তাদের সামনে জীবনের কোন মহৎ আদর্শ ও লক্ষ্য তুলে ধরতে পারেনি; তাদের সামনে নেই জীবনের কোন সুস্পষ্ট উদ্দেশ্য। ভাল কোন চাকরি লাভ বা পয়সা উপার্জনই বর্তমান সময়ে পড়াশোনার একমাত্র উদ্দেশ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে। অর্থাৎ ভোগবাদই যেন শিক্ষার এবং জীবনের একমাত্র উদ্দেশ্য হয়ে উঠেছে। যার কারণে ছাত্ররা তাদের জীবনে কোন মহৎ লক্ষ্য-উদ্দেশ্য ও আদর্শের তাড়না অনুভব করে না। বরং এই তরুণ বয়সে জীবনকে উপভোগ করার বর্ণিল আহবান ও চাকচিক্যই তাদেরকে বেশি প্ররোচিত করে, তারা সেগুলো উপেক্ষা করতে পারে না এবং সহজেই বিভ্রান্ত হয়ে গড্ডালিকা প্রবাহে হারিয়ে যায়। এতে শুধু যে তাদের পড়াশোনাই নষ্ট হয় তাই নয়, নৈতিক মূল্যবোধ সম্পন্ন যথার্থ মানুষ হিসেবে গড়ে উঠতেও তারা ব্যর্থ হয়।
আজ আমাদের এই ছোট্ট দেশটিতে যে মারাত্মক নৈতিক অবক্ষয়, সর্বগ্রাসী যে দুর্নীতি, সন্ত্রাস, নৈরাজ্য ও রাহাজানি অক্টোপাসের মত আষ্টেপিষ্টে আমাদেরকে বেঁধে ফেলেছে, তার মূল কারণ আজ উপলব্ধি করা প্রয়োজন। এ অবস্থা যদি আরো অব্যাহত থাকে তাহলে জাতি হিসেবে আমাদের পতন অবশ্যম্ভাবি। আসলে গোড়ায় গলদ রেখে মাথায় পানি ঢেলে লাভ নেই। জাতিকে বাঁচাতে হলে জাতির ভবিষ্যতকে আগে বাঁচাতে হবে।
জাতির ভবিষ্যত নাগরিকদেরকে নিশ্চিত ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা করতে হলে তাদের সামনে জীবনের সঠিক পথ, সঠিক জীবনদৃষ্টি এবং তাদের জীবনের সঠিক লক্ষ্য নির্ধারণ করতে সাহায্য করাই শিক্ষার লক্ষ্য হওয়া উচিত। শুধু অর্থ উপার্জন, শুধু উদরপূর্তি, শুধু বৈষয়িক প্রতিপত্তি অর্জন করাই শিক্ষার লক্ষ্য হওয়া উচিত নয়। বরং দেহ, মন ও আত্মিক উন্নতির বিষয়টিও নিশ্চিত করা প্রয়োজন। ঐশী কালাম আল কোরআনই সেই মহৎ আদর্শের নাম যা মানুষকে সত্যিকার মানুষ বা ইনসানে কামেল হিসেবে গড়ে তুলতে পারে। আমরা সেই ঐশী জীবনাদর্শের আলোকেই ছাত্র-ছাত্রীদের সামনে জীবনের একটি মহৎ স্বপ্ন এঁকে দিতে চাই। আশা করি এই স্বপ্নের পথে হেঁটেই তারা জীবনের সঠিক তাৎপর্য খুঁজে পাবে ইনশায়াল্লাহ।
Related categories
Reviews for ছাত্রজীবনে ইসলামের দাবী / Chhatro jibone islamer dabi (Bengali)
0 ratings0 reviews
Book preview
ছাত্রজীবনে ইসলামের দাবী / Chhatro jibone islamer dabi (Bengali) - মুহাম্মদ আবুল হুসাইন Muhammad Abul Hussain
গ্রন্থ প্রসঙ্গ
একটি ছোট্ট শিশুর কাছে মূল্যবান কোন রত্নও নিছক খেলনা মাত্র, কারণ ঐ জিনিসের গুরুত্ব তার কাছে বোধগম্য নয় যে। কারণে সে মূল্যবান রত্ন দিয়ে কিছুক্ষণ খেলা করে হয়তো ফেলে দেবে অবহেলায়, কিংবা কোন চালাক লোক হয়তো চকলেট কিংবা অন্য কোন খেলনা দিয়ে ভুলিয়ে ভালিয়ে তার কাছ থেকে নিয়ে নেবে দামী রত্নটি। বস্তুত, দামী জিনিসের দাম যারা বুঝে না তারা সে জিনিস নিজের কাছে বেশিক্ষণ রাখতে পারে না, আবার যারা ঐ জিনিসের গুরুত্ব বুঝে তারা সেটি নিজের অধিকারে নেয়ার চেষ্টা করে থাকে।
ছাত্রজীবন যে কত মূল্যবান, তাদের এই সময়টা যে কত গুরুত্বপূর্ণ তা তারা নিজেরাই অনেক সময় বুঝতে পারে না। আর এই না বুঝার কারণেই তারা অত্যন্ত অবহেলায় তাদের এই মূল্যবান সময়কে নষ্ট করে। এজন্য অবশ্য শুধু ছাত্রদেরকেও একতরফা দোষ দিয়ে লাভ নেই, কারণ আমাদের প্রচলিত শিক্ষা ব্যবস্থা তাদের সামনে জীবনের কোন মহৎ আদর্শ ও লক্ষ্য তুলে ধরতে পারেনি; তাদের সামনে নেই জীবনের কোন সুস্পষ্ট উদ্দেশ্য। ভাল কোন চাকরি লাভ বা পয়সা উপার্জনই বর্তমান সময়ে পড়াশোনার একমাত্র উদ্দেশ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে। অর্থাৎ ভোগবাদই যেন শিক্ষার এবং জীবনের একমাত্র উদ্দেশ্য হয়ে উঠেছে। যার কারণে ছাত্ররা তাদের জীবনে কোন মহৎ লক্ষ্য-উদ্দেশ্য ও আদর্শের তাড়না অনুভব করে না। বরং এই তরুণ বয়সে জীবনকে উপভোগ করার বর্ণিল আহবান ও চাকচিক্যই তাদেরকে বেশি প্ররোচিত করে, তারা সেগুলো উপেক্ষা করতে পারে না এবং সহজেই বিভ্রান্ত হয়ে গড্ডালিকা প্রবাহে হারিয়ে যায়। এতে শুধু যে তাদের পড়াশোনাই নষ্ট হয় তাই নয়, নৈতিক মূল্যবোধ সম্পন্ন যথার্থ মানুষ হিসেবে গড়ে উঠতেও তারা ব্যর্থ হয়।
আজ আমাদের এই ছোট্ট দেশটিতে যে মারাত্মক নৈতিক অবক্ষয়, সর্বগ্রাসী যে দুর্নীতি, সন্ত্রাস, নৈরাজ্য ও রাহাজানি অক্টোপাসের মত আষ্টেপিষ্টে আমাদেরকে বেঁধে ফেলেছে, তার মূল কারণ আজ উপলব্ধি করা প্রয়োজন। এ অবস্থা যদি আরো অব্যাহত থাকে তাহলে জাতি হিসেবে আমাদের পতন অবশ্যম্ভাবি। আসলে গোড়ায় গলদ রেখে মাথায় পানি ঢেলে লাভ নেই। জাতিকে বাঁচাতে হলে জাতির ভবিষ্যতকে আগে বাঁচাতে হবে।
জাতির ভবিষ্যত নাগরিকদেরকে নিশ্চিত ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা করতে হলে তাদের সামনে জীবনের সঠিক পথ, সঠিক জীবনদৃষ্টি এবং তাদের জীবনের সঠিক লক্ষ্য নির্ধারণ করতে সাহায্য করাই শিক্ষার লক্ষ্য হওয়া উচিত। শুধু অর্থ উপার্জন, শুধু উদরপূর্তি, শুধু বৈষয়িক প্রতিপত্তি অর্জন করাই শিক্ষার লক্ষ্য হওয়া উচিত নয়। বরং দেহ, মন ও আত্মিক উন্নতির বিষয়টিও নিশ্চিত করা প্রয়োজন। মহাকবি জন মিল্টন শিক্ষাদর্শন প্রসঙ্গে বলেছেন : Education is the harmonious development of body, mind and soul. অর্থাৎ- ‘দেহ, মন ও আত্মার সুসমন্বিত উন্নয়নই শিক্ষা’। কেবল মাত্র কোন মহৎ ও উন্নত জীবনাদর্শের মাধ্যমেই শিক্ষার এই মূল লক্ষ্যটি হাসিল করা যেতে পারে। আমরা মনে করি ঐশী কালাম আল কোরআনই সেই মহৎ আদর্শের নাম যা মানুষকে সত্যিকার মানুষ বা ইনসানে কামেল হিসেবে গড়ে তুলতে পারে। আমরা সেই ঐশী জীবনাদর্শের আলোকেই ছাত্র-ছাত্রীদের সামনে জীবনের একটি মহৎ স্বপ্ন এঁকে দিতে চাই। আশা করি এই স্বপ্নের পথে হেঁটেই তারা জীবনের সঠিক তাৎপর্য খুঁজে পাবে ইনশায়াল্লাহ। আল্লাহ আমাদের তৌফিক দিন, আমীন।
মুহাম্মাদ আবুল হুসাইন
প্রকাশের অপেক্ষায় লেখকের অন্যান্য বই
আল কোরআন : সৌভাগ্যের পরশ পাথর
Al Qur-an Study : A Selected Collection
নির্বাচিত প্রবন্ধ : কোরআন গবেষণা
সূরা ফাতিহার শিক্ষা এবং আজকের মুসলিম সমাজ
মহানবীর মিশন ও মুসলিম উম্মাহ’র দায়িত্ব
ধর্ম ও বিবেক
আকাশ নিয়ে ভাবি (শিশুতোষ বিজ্ঞান)
জগতটাকে জানি (শিশুতোষ বিজ্ঞান)
ইসলাম : বিশ্বশান্তির পথ প্রদর্শক
শিক্ষার গুরুত্ব
পশু সমাজে শিক্ষার কোন প্রতিষ্ঠানিক প্রচলন দেখা যায় না। একটি ছাগল-ছানা কিংবা একটি ছোট্ট বাছুরকে খাবার সংগ্রহ বা জীবন-পদ্ধতি শিক্ষা দেয়া এবং তাদের ছাগলত্ব কিংবা গরুত্ব বিকাশের জন্যও পশু সমাজে শিক্ষার আদান-প্রদানের কোন ব্যবস্থা আমরা দেখতে পাই না। তার কোন প্রয়োজনও নেই; কারণ জন্মগতভাবেই তারা পশুত্বের স্বভাব পেয়ে থাকে এবং প্রাকৃতিক নিয়মেই তাদের পশুত্বের বিকাশ হয়। মানুষের স্বভাবের মধ্যেও একটি পাশবিক সত্তা রয়েছে এবং মানব-প্রকৃতির এই পাশবিক সত্তার বিকাশও অন্যান্য পশু-পাখি ও জীব-জানোয়ারের মতই প্রাকৃতিক নিয়মে আপনা-আপনি হয়ে থাকে, পশু প্রবৃত্তি অর্জন করার জন্য কাউকেই কোন কষ্ট করতে হয় না; পশুত্ব বিনা পরিশ্রমেই অর্জন করা যায়। কিন্তু মানুষ কোন পশুর নাম নয়। অন্যান্য জীব-জানোয়ার ও পশু-পাখির তুলনায় সৃষ্টিকর্তা মানুষকে বিশেষত্ব ও শ্রেষ্ঠত্ব দিয়েছেন। বলাবাহুল্য সৃষ্টি জগতের অন্যান্য প্রাণীর তুলনায় মানুষের বিশেষত্ব ও শ্রেষ্ঠত্ব হল তার মনুষ্যত্বের কারণে। আর মানব শিশুকে এই মনুষ্যত্ব রীতিমত অর্জন করতে হয়। মনুষ্যত্ব হচ্ছে মানব-প্রকৃতিতে সুপ্তাবস্থায় বিদ্যমান মৌলিক মানবীয় ও সৎ গুণাবলী, তার বিবেকবোধ ও জীবনবোধ এবং তার সুকুমারবৃত্তি ও সৃজনশীলতা। এ সবের যথার্থ বিকাশের উপরই মানব সন্তানের মনুষ্যত্ব অর্জন নির্ভর করে।
আমরা দেখি মানব সন্তানকে তার জীবিকা অর্জন বা রুটি-রুজির জন্যও ব্যাপক কর্মমুখী শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ গ্রহণ করতে হয়। একজন মানুষ তার জীবিকা নির্বাহের জন্য কোন্ ধরনের পেশাকে বেছে নিবে তা তার জীবনের কৈশোর কাল থেকেই নির্ধারণ করে নিতে হয় এবং সে অনুযায়ীই তাকে পড়া-শোনা ও অধ্যয়ন করতে হয় এবং হাতে-কলমে শিক্ষা গ্রহণ করতে হয়। কিন্তু এই দৃষ্টান্ত পশুদের মধ্যে দেখা যায় না। পশুরা বনে-বাদারে ঘুরে-ফিরে কিংবা অন্যের কাছ থেকে কেড়ে-কুরে অথবা নিজের হিংস্র নখ ও দাঁত দিয়ে অপরকে হত্যা করে নিজেদের উদর পূর্তি করে থাকে।
জীবিকা নির্বাহের এই পন্থা মানুষের জন্য শোভনীয় নয়, কেননা তাতে মনুষ্যত্বের অবমাননা হয়। মানুষের থাকা, খাওয়া, জীবন-যাপণ সবই পশুদের তুলনায় উন্নত ও মর্যাদাসম্পন্ন। অবশ্য মানুষদের মধ্যেও কিছু কিছু মানুষকে দেখা যায়, যারা পশুদের মতই জোর করে অন্যের সম্পদ কেড়ে নেয়, চুরি-ডাকাতি, খুন-খারাবি করে কিংবা অন্য কোন অসৎ উপায়ে অন্যের সম্পদ কেড়ে নিয়ে নিজের উদর পূর্তি করে কিংবা সম্পদের পাহাড় গড়ে থাকে। কিন্তু এ ধরনের মানুষদেরকে মানব সমাজের অন্য সকল মানুষই ঘৃণা করে থাকে এবং মনুষ্য সমাজে তারা ইতর বা মানুষরূপী পশু হিসেবেই পরিগণিত হয়।
আবার মানুষ শুধু খেয়ে-পড়েই সন্তুষ্ট থাকতে পারে না, সে জীবন ও জগৎ সম্পর্কে নানা কৌতূহল বোধ করে, তার মনের মধ্যে নানা প্রশ্ন এসে ভীড় করে। কারণ মানুষ একটি বুদ্ধিমান সত্তা। এ কারণে জীবন ও জগতের রহস্য সে উন্মোচন করতে চায়, জানতে চায়, বুঝতে চায়। এসব কারণে শুধুমাত্র কর্মমুখি শিক্ষাতেও মানুষ সন্তুষ্ট নয়, জগতের নানা বিষয়ের জ্ঞান-বিজ্ঞানও তাকে আয়ত্তে করতে হয়।
আবার মানুষ কেবলমাত্র বুদ্ধিমান প্রাণীই নয়, তার একটি নৈতিক ও সামাজিক সত্তাও রয়েছে। সে সমাজবদ্ধ হয়ে বাস করতে ভালোবাসে এবং সমাজ ও মানুষের প্রতি একটি দায়বদ্ধতাও সে অনুভব করে। এ কারণে মানব সন্তানকে তার নিজস্ব সমাজ, সংস্কৃতি ও ধর্ম সম্পর্কেও জানতে হয় এবং নিজ সমাজের একজন আদর্শ, সৎ ও যোগ্য সদস্য হিসেবে নিজেকে গড়ে তোলার জন্যও তাকে আত্মগঠন করতে হয়।
এভাবে চিন্তা করলে দেখা যাবে মানব শিশুকে যথার্থ মানুষ হয়ে উঠতে হলে তাকে অনেক কিছু জানতে ও বুঝতে হয় এবং নিজের ভবিষ্যত জীবনকে সুন্দর করার লক্ষ্যে জীবনের একটি বিরাট সময় পর্যন্ত তাকে জ্ঞান অর্জন ও আত্মগঠনের কঠোর সাধনা ও অধ্যবসায়ে নিয়োজিত থাকতে হয়। বলাবাহুল্য, এই কঠোর অধ্যবসায় ও সাধনার মাধ্যমে সত্যিকার মানুষ হয়ে ওঠার মধ্যেই মানব সত্তার শ্রেষ্ঠত্ব এবং তার বিশেষত্ব ও সার্থকতা নিহিত।
ছাত্রজীবন : গুরুত্ব, দায়িত্ব ও কর্তব্য
ছাত্রজীবন
সাধারণত যে শিক্ষা গ্রহণ করে তাকেই ছাত্র/ছাত্রী বলা যায়। এ হিসেবে শিশু থেকে বুড়ো প্রত্যেক জ্ঞান-অন্বেষী বা বিদ্যা শিক্ষার্থীই ছাত্র বা ছাত্রী। তবে বিশেষভাবে ছাত্রজীবন বলতে আমরা মানুষের জীবনের উন্মেষ কাল থেকে শুরু করে পরিণত মানুষ হওয়ার আগ পর্যন্ত সেই নিরবিচ্ছিন্ন সময়কালটিকে বলতে পারি যে সময়টাতে মানুষ প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা অর্জন করার জন্য পুরোপুরি আত্মনিয়োগ করে থাকে। সোজা কথায় মক্তব থেকে মাদ্রাসা পর্যন্ত বা স্কুল থেকে কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াকালীন সময়টাকেই সাধারণত ছাত্রজীবন বলে অভিহিত করা হয়। ছাত্রজীবন হল নিরবিচ্ছিন্ন জ্ঞান অর্জন বা শিক্ষা গ্রহণের কাল। শিশুকাল থেকেই এ জীবন শুরু হয় এবং কর্মজীবনের আগ পর্যন্ত এ জ্ঞান সাধনার কাজে একজন মানুষকে নিমগ্ন থাকতে হয়। যথাযথভাবে শিক্ষা গ্রহণের মাধ্যমে ছাত্রজীবনের সমাপ্তির পরই শুরু হয় কর্মজীবন। ছাত্রজীবনে যে যত বেশি জ্ঞানার্জন ও আত্মগঠনে সক্ষম হবে, যত বেশি কৃতিত্ব অর্জন করবে কর্মজীবনে সেই তত বেশি সফলতা ও দক্ষতার স্বাক্ষর রাখতে পারবে। এ কারণেই ছাত্রজীবনকে বলা হয় আত্মগঠন বা ক্যারিয়ার গঠনের সময়।
ছাত্রজীবনের গুরুত্ব
১. সময়ের সদ্ব্যবহার
‘Time and tide wait for none’ কথাটি খুবই সত্যি। সময় ও স্রোত কারো জন্যেই অপেক্ষা করে না। ছাত্রজীবনও তেমনি। আর ছাত্রজীবনের যে সময়কালটা, এটাকে শুধু সময় বললে কম বলা হবে, বলা উচিত মহামূল্যবান সময়। এটি এমন এক সময়, যে সময়কে অবহেলা ও