দেশ বিদেশের উপকথা
()
About this ebook
পৃথিবীর সব দেশেই প্রচুর কাহিণী লোকমুখে চলে আসছে। তাঁদের মধ্যে পার্থক্য খালি থাকে, নায়ক নায়িকার চরিত্র বর্ণণে আর ঘটনার স্থান আর কালের উপরে। গুটেনবার্গ প্রোজেক্টের মাধ্যমে আজকাল এই সব লোককাহিণী বা উপকথাগুলি সাধারণের কাছে সহজলভ্য হয়ে গেছে। কিন্তু দুঃখ এক জায়গাতেই । গল্পগুলি স্থানীয় ভাষা থেকে ইংরাজি তে অনুবাদ করে রাখা আছে।
যারা ইংরাজীতে গল্পগুলি পড়ে তাঁর রসের বা ভাবের আস্বাদ নিতে পারবেন না তাঁদের উপকারে এইকটি বিভিন্ন জায়গার উপকথা বাঙ্গলাতে অনুবাদ করে এক সাথে সঙ্কলিত করে দিলাম।
a collection of folktales from different regions, translated in Bengali. contains tewnty such tales.
Dilip Kr. Bandyopadhyay
Retired from service since last 20 years. Writes in Bengali mostly in rhyming poems. Interested in travel. Happily married.
Reviews for দেশ বিদেশের উপকথা
0 ratings0 reviews
Book preview
দেশ বিদেশের উপকথা - Dilip Kr. Bandyopadhyay
পৃথিবীর সব দেশেই প্রচুর কাহিণী লোকমুখে চলে আসছে। তাঁদের মধ্যে পার্থক্য খালি থাকে, নায়ক নায়িকার চরিত্র বর্ণণে আর ঘটনার স্থান আর কালের উপরে। গুটেনবার্গ প্রোজেক্টের মাধ্যমে আজকাল এই সব লোককাহিণী বা উপকথাগুলি সাধারণের কাছে সহজলভ্য হয়ে গেছে। কিন্তু দুঃখ এক জায়গাতেই । গল্পগুলি স্থানীয় ভাষা থেকে ইংরাজি তে অনুবাদ করে রাখা আছে।
যারা ইংরাজীতে গল্পগুলি পড়ে তাঁর রসের বা ভাবের আস্বাদ নিতে পারবেন না তাঁদের উপকারে এইকটি বিভিন্ন জায়গার উপকথা বাঙ্গলাতে অনুবাদ করে এক সাথে সঙ্কলিত করে দিলাম। যদি এটি আপনাদের মনোরঞ্জন করতে পারে তবে আগে আরও কিছু লেখার জন্য উৎসাহ পাব।
আমার সাথে যোগাযোগ করার জন্য আমাকে মেল করতে পারেন। আমার মেল আই ডি হচ্ছে : dilip.k@aol.com
সূচীপত্র
১) বাঘের গাঁয়ে দাগ কি করে হল (মায়ানমার)
২) আন তিয়েমের তরমুজ (ভিয়েতনাম)
৩) ইদুর কন্যের বিয়ে (শ্রীলঙ্কা)
৪) কালিয়ং আর রাক্ষসী (মণিপুর)
৫) সিংহ, শেয়াল আর মানুষ (দঃ আফ্রিকা)
৬) চাঁদ আর সূর্যের কথা (মেক্সিকো)
৭) তুষারকন্যা (রাশিয়া)
৮) কৃতজ্ঞতা (জাপান)
৯) নরকের পাহারাদার (অষ্ট্রিয়া)
১০) বেড়াল কেন ইঁদুর খায় (দক্ষিণ নাইজেরিয়া)
১১) তিন উপদেশ (ইটালী)
১২) মোরগের জামাই রাজা (নাইজেরিয়া)
১৩) বুড়ী আর তার খড়ের ষাঁড় (উক্রেইন)
১৪) ট্রুহানার কি হয়েছিল (স্পেন)
১৫) কলু আর তার ছেলে (সাঁওতালী)
১৬) শয়তানের সঙ্গী (সুইজারল্যান্ড)
১৭) নাগিনী বউয়ের কথা (উক্রেন)
১৮) নেকড়ে, শেয়াল আর ভেড়ার গল্প (দঃ আফ্রিকা)
১৯) বাঁদরের বাঁদরামো (সাঁওতালী)
২০) বাঘ, শেয়াল আর পণ্ডিত (ভারতবর্ষ)
বাঘের গায়ে দাগ কি করে হল
(মায়ানমারের উপকথা)
কোন এক সময়ে এক জঙ্গলে একটা বিরাট বাঘ থাকত। আর তার সবচেয়ে প্রিয় বন্ধু ছিল এক খরগোস। তখন কিন্তু বাঘের গায়ে ডোরাকাটা দাগ ছিলনা। সুন্দর, সোনার রঙ একেবারে ঝলমল করেছে।
এদিকে খরগোস ভায়া ছিল ভীষন দুষ্টু। সবার সাথে যখন তখন ইয়ার্কি মারে। একে ওকে ক্ষেপায়, মানে একেবারে দুষ্টুর শিরোমণি। আর তাই এই খরগোসের কোন বন্ধুও ছিল না। সবাই তাঁকে এড়িয়ে চলত। খালি এই বাঘটাই তাঁকে বন্ধু হিসাবে মেনে নিয়েছিল। তাও বেচারী খরগোসের কোন বন্ধু নেই দেখার পরে। আর এমনিতে ভোলাভালা ছিল বাঘটা। তাঁকে নিয়ে কেউ মস্করা করছে কিনা, সেটা সে আর খেয়াল রাখত না।
একদিন খরগোস এল বাঘের সাথে দেখা করতে। কি ব্যপার? খরগোস বাঘকে বলে, বন্ধু, কাল আমাকে তুমি একটু সাহায্য করতে পারবে? বর্ষাকাল তো এসেই গেল, আমার ঘরের ছাতটাকে নতুন করে ছাইতে হবে। তাই কিছু খড়ের দরকার। তুমি আমাকে সাহায্য করলে, খড়কাটার পুরো কাজটা একদিনেই হয়ে যাবে
।
বাঘ ভায়ার খেয়াল নেই যে খরগোস থাকে গর্তে। তার কোন ঘর বানানর কিসের দরকার? সে খুসী মনে বলে দিল, ঠিক আছে, আমি তোমার সাথে যেতে রাজী
। খরগোস বললে, আমাদের ঐ বড় জঙ্গলটা পেরিয়ে যেতে হবে, অনেকটা পথ। সক্কাল সক্কাল বেড়িয়ে পরব। সাথে খাবার নিতে ভুল করো না যেন
।
পরের দিন সক্কাল বেলায় দুজনে রওয়ানা দিল। খরগোস বাঘের অজান্তে চড়ল বাঘের পিঠে। আর হাল্কা হবার জন্য বাঘ বুঝতেও পারল না যে খরগোস তার পিঠে বসে আছে।
খরগোসের হাতে ধরা আছে দুটো খাবারের প্যাকেট। একটাতে খরগোসের আনা একটা প্যাকেট, যাতে আছে কিছুটা বালি মেশান গোবর। আর ওদিকে বাঘ ভায়া দুজনের পছন্দ মতন ভাল খাবারই এনেছে।
জায়গা মতন পৌছনোর পরে বাঘ তো কাজে নেমে পড়ল। এদিকে খরগোস বললে, সে খুব ক্লান্ত হয়ে গেছে, তাই একটু বিশ্রাম না নিয়ে কাজে লাগতে পারছে না। বাঘ ভায়ার কিন্তু খেয়াল এল না যে খরগোস তো সারাক্ষণ তার পিঠেই চড়ে এসেছে, তার ক্লান্ত হবার কোন সম্ভাবনা নেই।
যতক্ষণ বাঘ ভায়া তার কাজ শেষ করছে ততক্ষনে খরগোস বাঘের আনা খাবারটা খেয়ে নিয়ে খালি ঐ গোবর আর বালি মেশান প্যাকেটটা রেখে দিল। বাঘ ভায়া কাজ সেরে এসে খেতে বসলে, খরগোস বলে, পুরাকালে জ্ঞানী ব্যক্তিরা বলে গেছেন যে যারা খাবার সময়ে খেতে আসেনা, তাঁদের খাবার বালি আর গোবর মেশান হয়ে যায়
। বাঘ দেখে সত্যিই তার খাবারটা গোবর মেশানো বালি হয়ে গেছে, তাই খেতে পারল না। কিন্তু ভাবতে লাগল সত্যি পুরাকালে লোকেরা কত কি জানত।
সন্ধ্যের মধ্যে বাঘ ভায়া দুটো বিরাট বড় খড়ের আঁঠি কেটে তৈরী করে নিল, যাতে দুটোকে নিয়ে যাওয়া যায়। তার পরে দুজনে দুটো আটি ঘাড়ে তুলে ফেরার জন্য হাঁটা দিল। খরগোসকে অত বড় আটির নীচে দেখা যাচ্ছিল না বলে সে কখন তার আটিটা বাঘের ঘারে চাপিয়ে বেরিয়ে এসে কিছু না নিয়েই চলতে লাগল।
কিছুটা যাবার পরে, খরগোস