আধ্যাত্মিক বিপদসমূহ

সূচিপত্র

সূচিপত্র

অধ্যায় ১

কেন কিছু নির্দিষ্ট বিষয় প্রথমে সম্পন্ন করা আবশ্যক

অধ্যায় ২

কেন ঈশ্বরের রাজ্য আপনার প্রথম আকাঙ্খা হওয়া প্রয়োজন

অধ্যায় ৩

ব্যভিচারের ঝুঁকিসমূহ

অধ্যায় ৪

ব্যাভিচার এড়ানোর পদক্ষেপসমূহ

অধ্যায় ৫

ব্যভিচার প্রতিরোধে আধ্যাত্মিক চাবিসমূহ

অধ্যায় ৬

একজন অদ্ভুত নারী বলতে কী বোঝায়?

অধ্যায় ৭

একজন অদ্ভুত নারীর চিহ্নসমূহ

অধ্যায় ৮

বাইবেলে অদ্ভুত নারী

অধ্যায় ৯

মহিলাদের প্রতি আপনার আকর্ষণ বোঝার জন্য দশটি চাবি

অধ্যায় ১০

একটি দ্বৈত জীবনের বিপদ

অধ্যায় ১১

দশ ধরনের দ্বৈততা

অধ্যায় ১

কেন কিছু নির্দিষ্ট বিষয় প্রথমে সম্পন্ন করা আবশ্যক

খ্রীষ্টধর্মাবলম্বীদের জন্য ভুল অগ্রাধিকারগুলো খুব বিপদজনক। যখন আপনি একজন পাপী, আপনাকে মূলত দুটি বিষয়ের মধ্যে একটি নির্বাচন করতে হয়: ভাল এবং মন্দ। যখন আপনি প্রভুতে বৃদ্ধি পেতে থাকেন, আপনার জন্য বিভিন্ন ধরনের দ্বার খুলে যায় এবং সেখান থেকে আপনি অনেক বিষয় বেছে নিতে পারেন।

এই সময়ে আপনার নির্বাচনীয় বিষয় ভাল এবং মন্দের মধ্যে নয় কিন্তু ভাল এবং ভালোর মধ্যে হয়। যখন প্রশ্ন আসে কিছু করার, আপনার নির্বাচনের জন্য অনেক উত্তম উত্তম বিষয় উন্মুক্ত হয়। আর আপনি যখন তেমন একটি অবস্থানে পৌঁছান আপনার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ যে অগ্রাধিকারের বিষয়গুলো আপনি ভালভাবে বোঝেন যে: কোন বিষয়টি আমার প্রথম সম্পন্ন করা প্রয়োজন? যীশু খ্রীষ্ট আমাদের কাছে সেই মহৎ বিষয়টি প্রকাশ করেছেন যা সর্বপ্রথম সম্পন্ন করা প্রয়োজন।

এই বিষয়টি অধ্যয়ন করা কৌতুহলোদ্দীপক যে কতগুলো বিষয় যীশু বলেছেন যা প্রথমে করা উচিৎ। যখনই যীশু প্রথম বা প্রধান বিষয়টি সম্পর্কে বলেছেন, তিনি ব্যবহার করেছেন গ্রীক শব্দ প্রোটন। এই বইটিতে, আমরা প্রোটন বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করব: যা যীশু আমাদেরকে সর্বপ্রথম সম্পন্ন করতে বলেছেন।

একজন খ্রীষ্টধর্মাবলম্বী হিসেবে, আপনার প্রথম বিষয়টি প্রথমে করা উচিৎ। প্রথম বিষয়টি প্রথমে অর্থ সঠিক সময়ে, ক্রমানুসারে, সংখ্যায়, মর্যাদায়, উপযুক্ত মূল্যে।

কেন একজন খ্রীষ্টানকে অবশ্যই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি আগে সম্পন্ন করতে হবে।

১.  যে কোন কিছু প্রথমে সম্পন্ন করা না হলে তখন এর গুরুত্ব কমতে থাকে।

ঈশ্বর আমাদের প্রতি অত্যন্ত ধৈর্যশীল। অনেকেই তার অবাধ্য হয়েছে এবং তার কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়েছে। যখন আমরা প্রতিনিয়ত এই অবাধ্যতায় চলতে থাকি ঈশ্বরের বাক্যের তাৎপর্য আমাদের জীবন থেকে বিলীন হতে থাকে। খুব শীঘ্রই যা অন্য সব কিছুর চেয়ে গুরুত্বপুর্ণ সেই বিষয়টি অবজ্ঞার এবং অপ্রাসঙ্গিক হয়ে যায়।

আজ আমি একজন অভিষিক্ত প্রভুর সেবক এবং অনেকেই আমাকে আমার সেবা কাজের জন্য সম্মান করেন। কিন্তু যদি আমি উপযুক্ত সময়ে ঈশ্বরকে মান্য না করতাম, আমি হয়তো একজন ডাক্তার হিসেবে খুবই সাধারণ জীবন-যাপন করতাম। ঈশ্বরের আহ্বান সম্পর্কে আলোচনা হয়তো অর্থহীন বা অপ্রাসঙ্গিক মনে হতে পারত।

বিভিন্ন হাসপাতালে যখন আমার সহকর্মীদের সাথে কাজ করতাম, আমার একজন পালক হওয়ার আকাঙ্খাটি হাস্যকর বলে মনে হত। আমি অনেক সময় আমার বন্ধুদের বলতাম, আমি তোমাদেরকে আমার একটা অর্থহীন ইচ্ছার কথা বলতে চাই যা আমার পূর্বে ছিল। তোমরা কি জান যে আমি একসময় একজন পালক হতে চেয়েছিলাম? আমরা যখন যুবক ছিলাম, আমরা অতি আধ্যাত্মিক ও অবাস্তবধর্মী ছিলাম।

আপনি কি কখনও এমন কোন পূর্ণবয়স্ক ব্যক্তিকে দেখেন নি যারা বলে তারা পালকীয় কাজের জন্যই বেড়ে উঠছিলেন? তারা তাদের বৃদ্ধ বয়সে সন্তানদের মাধ্যমে তাদের অবাধ্যতার খেসারৎ দেয়ার চেষ্টা করেন।

আমি একজন ব্যক্তিকে জানি যিনি তার সন্তানদের মধ্যে একজনকে পালক হওয়ার জন্য বাধ্য করার চেষ্টা করেছিলেন।

তিনি তার ছেলেদের বললেন, ঈশ্বর আমাকে একজন পালক হওয়ার জন্য আহ্বান করেছিলেন কিন্তু আমি তা করি নি। এখন তুমি সেই পালক হও এবং আমি তোমাকে অনেক সম্পতি ও অর্থ দেব যেন তোমার কোন অভাব না হয়। তাদের জীবনের শেষ পর্যায়ে এসে তারা ঈশ্বরের আহ্বানের প্রতি অসম্মতি ও অসহযোগিতাপূর্ন জীবনের জন্য নিদারুণভাবে প্রতিদান দিতে চান।

প্রিয় বন্ধু, আমি আপনাকে নিশ্চিতভাবে বলতে পারি যে যত বেশি আপনি আপনার নিজের ইচ্ছানুসারে চলবেন তত বেশি ঈশ্বরের নির্দেশনা দূরবর্তী ও অবাস্তব মনে হবে। একারণে প্রোটন প্রয়োজন।

প্রোটন, প্রথমের বিষয় প্রথমে করা, আপনাকে প্রলোভন থেকে রক্ষা করে। ঈশ্বর আপনার যত্ন নেবেন এবং আপনার সাথে থাকবেন যদি আপনি তাঁর ইচ্ছার মধ্যে থাকেন।

২.  যে কোন কিছু প্রথমে সম্পন্ন করা না হয় তা হয়তো কখনই করা হয় না।

দেরী মানে বেশিরভাগ সময়ে বাতিলকরণ। যেকোন কিছু প্রথমে সম্পন্ন করা না হয় তা হয়তো কখনই করা হয় না। আমি কখনই জানতাম না যে প্রকৃতপক্ষে কোন কিছু করতে দেরী করলে তা বাতিলকরণের দিকে নিয়ে যায়।

একদিন আমার লন্ডন থেকে নিউ ইয়র্কে পরিচর্যাকারী হিসেবে যাওয়ার কথা ছিল। প্রকৃতপক্ষে, ঐ রাতে আমার মেরিল্যান্ডে পরিচর্যা করার কথা পূর্বে নির্ধারিত ছিল। দুর্ভাগ্যবশত, আমার ফ্লাইট ছিল খুব ভোরে লন্ডনের হিথরো থেকে আমস্টারডাম পর্যন্ত এবং তারপর আমস্টারডাম থেকে নিউ ইয়র্কে। যে কোন ভাবেই হোক আমি টিকিটে দেখা সময় বিশ্বাস করতে পারছিলাম না। আমি ভেবেছিলাম এত ভোরে সময় সঠিক হতে পারে না।

যখন আমি বিমানবন্দরে পৌঁছালাম, আমার জীবনে সর্বপ্রথম, আমি বিমানবন্দরের ভিতরে প্রবেশ করতে ও বিমানে ওঠার জন্য অনেক দেরী করে ফেলেছিলাম। আমি প্রবেশ করতে বিশ মিনিট দেরী করে ফেলেছিলাম। এটা ছিল খুবই হতাশাজনক। আমাকে আমস্টারডাম যাওয়ার জন্য পরবর্তী ফ্লাইটের জন্য অপেক্ষা করতে হয়েছিল।

তারা আমাকে বললেন, আপনি আপনার প্রথম নিউ ইয়র্ক যাত্রার অংশগ্রহণ করতে ব্যর্থ হয়েছেন, কিন্তু আপনি পরবর্তী বিমান যাত্রায় অংশগ্রহণ করতে পারেন। সেই সময়েও আমি অনুভব করছিলাম যে এখনও আমার পক্ষে নিউ ইয়র্কে পৌঁছানো সম্ভব এবং সঠিক সময়ে মেরিল্যান্ডে পৌঁছাতে পারি। তাই আমি নিউ ইয়র্কে ফোন করলাম এবং পালককে আমার সম্ভাব্য পৌঁছানোর সময় বললাম এবং তাকে জানালাম আমাদের হয়তো খুব দ্রুত গাড়ি চালিয়ে মেরিল্যান্ডে পৌঁছাতে হবে। আমি তাকে নিশ্চয়তা দিলাম যে আমরা সঠিক সময়ের সাথে চলছিলাম এবং একটু বিদ্বেষজনক দেরীতে হলেও কার্যক্রম সম্পন্ন হবে।

আমস্টারডামে, আমি কোন সংশয় ছাড়াই পরবর্তী নিউ ইয়র্কের ফ্লাইটে উঠলাম এবং জানতাম যে অবিলম্বে বিমান উড্ডয়ন করবে এবং আমি আমার গন্তব্যে এগিয়ে যাব। কিন্তু কিছুক্ষণ পর, আমি জানালা দিয়ে বাহিরে তাকালাম এবং দেখলাম লোকেরা বিমানের পাখাগুলো সেচন করছে। এরপর একটি ঘোষনা শোনা গেল: ইঞ্জিনে প্রচুর পরিমাণে বরফ জমে আছে তাই বিমান উড্ডয়ন নিরাপদ নয়। আমাদের এক ঘন্টা প্রয়োজন চালনার উপযোগী করতে। দয়া করে আমাদের সাথে ধৈর্যপূর্বক অপেক্ষা করুন। 

আমি অন্যভাবে হিসাব মেলাতে শুরু করলাম এবং তখনও অনুভব করছিলাম আমি মেরিল্যান্ডের সম্মেলনে অংশগ্রহণ করতে পারবো। মন্ডলীর সকলে আমার জন্য অপেক্ষা করে থাকবে। তারা কয়েক সপ্তাহ যাবৎ আমার জন্য অপেক্ষা করে আছে। দুর্ভাগ্যবশত, আমি যেমন ভেবেছিলাম তেমন হলো না।

বরফের সমস্যা সমাধানের পরবর্তীতে, নতুন আরেকটি সমস্যার উদয় হল, আরও অতিরিক্ত বিলম্বের আভাশ। এই সময় তারা বললেন বিমানের টয়লেটগুলো কাজ করছে না। আমি পূর্বে কখনও শুনি নি বিমানের টয়লেট কাজ করে না কিন্তু আমার সামনে এটা ঘটছিল! পরিশেষে আমরা উড্ডয়নের পূর্বে এটা দুই ঘন্টা সময় নিল।

আমার প্রতিটি মিনিট কাটছিল নিদারূণ মানসিক যন্ত্রণায়, অনুতাপ করছিলাম এই ভেবে কত লোক ঐ সম্মেলনের জন্য একত্রিত হয়েছে। অবশেষে আমাকে মেনে নিতে হল যে হয়তো সম্মেলনটি বাতিল করা হয়েছে কারণ আমি সময়মত সেখানে পৌঁছাতে পারি নি। যখন আমি চেয়ারে বসেছিলাম, আমি অনুতাপ করছিলাম কিভাবে লন্ডনে বিশ মিনিট দেরী আমার সম্পূর্ণ সম্মেলনটি বাতিল করে দিল।

এরপর ঈশ্বর আমার সাথে কথা বললেন: তুমি কি বুঝতে পেরেছো যে দেরী করা বাতিলকরণে পরিণত হতে পারে?

প্রভু আমাকে দেখালেন যে তার আদেশ পালনে দেরী করা তার ইচ্ছা আর কখন মান্য করতে না পারাও হতে পারে! প্রভু আমাকে বুঝালেন যে তিনি আমাকে এই অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে নিয়েছেন যেন আমি শিখতে পারি কিভাবে তার ইচ্ছা পালনে