লাইকোস লে-ব্যক্তি লে-লোকেরা লে-পালক স্বেচ্ছাসেবক

লে-ম্যান (বা সাধারণ মানুষ) শব্দটি গ্রীক শব্দ ‘লাইকোস’ থেকে এসেছে, এই শব্দটির অর্থ হলো "যার কোন বিশেষ দাতা নেই। মানুষের ইতিহাসে আমরা দেখতে পাই যে যাদের কোন বিশেষ দক্ষতা নেই তাদের মধ্য দিয়েই আশ্চর্য্য আশ্চর্য্য সব কাজ সাধিত হয়েছে। লে মানুষ বা সাধারণ মানুষের অবদানের দিকে একটু চোখ বোলালেই  আপনার পরিচর্যাতে তাদেরকে ব্যবহার করবার জন্য আপনি অনুপ্রাণিত হবেন। এই লে ম্যানদের মধ্য দিয়েই কিন্তু হারানো আত্মাদের জয় করে ফিরিয়ে আনা যাবে, মন্ডলী স্থাপিত হবে, ছোট ছোট দল প্রতিষ্ঠিত হবে ও ঈশ্বরের কাজ চারিদিকে ছড়িয়ে পড়বে।

লে-ম্যানের সংজ্ঞা আমরা নীচের এই বাক্যগুলোর মধ্য দিয়ে পেতে পারি:

১.      একজন লে-ম্যান একজন সাধারণ মানুষ

২.      একজন লে-ম্যান একজন স্বাভাবিক মানুষ

৩.     একজন লে-ম্যান একটি সাধারণ স্তরের মানুষ

৪.      একজন লে-ম্যান একজন অযোগ্য মানুষ

৫.      একজন লে-ম্যান একজন নিয়মিত মানুষ

৬.     একজন লে-ম্যান একজন সকলের মানুষ

৭.      একজন লে-ম্যান একজন প্রতিদিনের মানুষ

৮.      একজন লে-ম্যান একজন গড়পড়তা মানুষ

৯.      একজন লে-ম্যান এমন একজন মানুষ পেশাদার নয়

১০.   একজন লে-ম্যান এমন একজন লোক যিনি ওস্তাদ নয়

১১.    একজন লে-ম্যান এমন একজন মানুষ যিনি বিশেষজ্ঞ নয়

লাইকোস: লে-ব্যক্তি, লে-লোকেরা, লে-পালক, সেচ্ছাসেবক

১২.    একজন লে-ম্যান এমন একজন লোক যিনি দক্ষ নয়

১৩.   একজন লে-ম্যান এমন একজন মানুষ যিনি প্রশিক্ষিত নয়

১৪.    একজন লে-ম্যান এমন একজন লোক যিনি বিশেষভাবে অনুমোদিত নয়

১৫.    একজন লে-ম্যান এমন একজন লোক যিনি লাইসেন্সপ্রাপ্ত নয়

মন্ডলীর বিশ্বে মহান কার্য সাধন

১. লে-ম্যানেরা মন্ডলীর সুমহান পুনর্গঠনে স্তম্ভ হিসেবে কাজ করেছেন।

সাধারণ মানুষের ভাষায় মার্টিন লুথারের বাইবেল অনুবাদের কাজ সমস্ত পৃথিবী বদলে দিয়েছিল। এভাবে, শুধু মাত্র লাটিন ভাষায় লিখিত থাকার বদলে, পবিত্র বাইবেলটি সাধারণ মানুষের কাছে আরোও সহজবোধ্য হয়ে উঠেছিল। একবার যখন সাধারণ মানুষের হাতে ঈশ্বরের প্রকাশিত জ্ঞান এসে পৌছোলো তাতে সমস্ত পৃথিবী বদলে গেল। ঈশ্বরের অনুগ্রহে সকল মানুষ ঈশ্বরের প্ররিত্রাণ লাভ করতে পারবে এ কথাটি জানার পরপরই তারা উঠে দাঁড়ালেন ও আমরা যাকে আজ সুমহান পুনর্গঠন বলে জানি সেই কাজটি তারা সাধন করলেন।

২. মেথোডিস্ট চার্চের স্তম্ভ হিসেবে কাজ করছেনে লে- ম্যানরা।

বিংশ শতাব্দীর মধ্যভাগে, আমেরিকাতে মেথোডিস্ট চার্চের ধারা সব চাইতে শক্তিশালী ছিল। এই মন্ডলীটি লে-ম্যানদের পিঠের উপরই নির্ভর করে চলতো। মেথোডিস্ট চার্চের একেবারে প্রথম দিকের প্রচার করার নিয়ম অনুসারে একজন লে প্রচারককে প্রচার করতে হলে তাকে আরাধনা পরিচালনার জন্য ‘সার্কিট’ নামে পরচিতি কয়েকটি মন্ডলীর একটি দলে নিযুক্ত হতে হতো। তিনি নির্দিষ্ট সময় অনুযায়ী সেই স্থানে ঘোড়ায় চড়ে বা পায়ে হেঁটে গিয়ে প্রচার করতনে। প্রচারক ও পালকদরে নিযুক্তির পরে, এই মেথোডিস্ট স্থানীয় প্রচারক’দলে লে-প্রচার ঐতিহ্য চলতে থাকে ও স্থানীয় মন্ডলী কর্তৃক প্রচারকগণ নিযুক্ত হতেন, এবং তারা পরর্বতীতে র্পাশ্বর্বতী মন্ডলীতে পালকরে অনুপস্থিতিতে তার বদলে প্রচারের আমন্ত্রণ ও সমর্থন পেতেন।

লাইকোস: লে- ম্যান

৩. সারা বিশ্বে নির্দিষ্ট বৃহৎ মন্ডলীগুলির স্তম্ভ হিসেবে লে-ম্যানরাই কাজ করছেনে।

ইয়দো ফুল গসপলে চার্চের যে সব নীতিমালা ভিত্তিমূলক নীতি হিসেবে কাজ করেছে তার মধ্যে লে-লোকদরে মধ্য দিয়ে কাজ করাকে সব চেয়ে বেশী গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।

ইয়দো ফুল গসপলে চার্চের ভিত্তি স্থাপিত হয় ডেভিড ইয়ঙ্গি চো ও তার শ্বাশুড়ি মাতা চয় জা শিলের দ্বারা- তারা দুজনেই এসেম্বিলিজ অব গড চার্চের পালক ছিলেন। তারা তাদরে প্রথম উপাসনাটি মে ১৫, ১৯৫৮ সালে আরম্ভ করেন। সেখানে চয় জা শিলের বাড়ীতে আরোও চারজন মহিলা ছিলেন।

১৯৭৭ খ্রীঃ নাগাদ এই মন্ডলীর সদস্য সংখ্যা হয় পঞ্চাশ হাজার, এবং পরর্বতী দুই বছরে এই সংখ্যা দ্বিগুণ হয়ে যায়। ৩০ নভেম্বর ১৯৮১ খ্রীঃ সদস্য সংখ্যা দুই লক্ষরও অধিক হয় এই সময়ের মধ্যে। লস এঞ্জেলস টাইমস এর মত পত্রিকা দ্বারা সারা বিশ্বের মধ্যে স্থানীয় বৃহত্তম মন্ডলী হিসেবে স্বীকৃত হলো। ২০০৭ খ্রীঃ তার সদস্য সংখ্যা হলো ৮,৩০,০০০ ও সেখানে প্রতি রোববারে সাতবার উপাসনা হোত যা ১৬টি ভাষায় অনুবাদ করে শ্রোতাদের কাছে প্রচার করা হত।

৪. নাইজেরিয়া ও ঘানার মন্ডলীগুলির বিরাট নেটওয়ার্কের স্তম্ভরাই হলেন লে-মানুষ।

নাইজেরীয় মন্ডলী রিডিম্ড খ্রীষ্টিয়ান চার্চ অব গড ও ঘানার চার্চ অব পেন্টিকস্ট যে, লে মানুষদেরকে তাদের মন্ডলীতে ব্যবহার করছে তা সবাই জানে। এই দুটি পরিচর্যাতেই বিশাল মন্ডলীর নেটওয়ার্ক আছে ও তারা  নিয়মিতভাবে প্রচার করা ও পালকীয় দায়িত্ব পালন করার জন্য লে-ম্যানদেরকে ব্যবহার করে থাকেন।

চার্চ অব পেন্টিকস্ট মন্ডলীটি ব্রাডফোর্ড,  ইউকে তে স্থাপিত এপস্টলিক চার্চ দ্বারা তখনকার গোল্ড কোস্টে (আফ্রিকা) প্রেরিত আইরীশ মিশনারী জেমস ম্যাককিয়ন স্থাপন করেছিলেন।

এই মন্ডলীটি বৃদ্ধি পেয়ে এখন তার সদস্য সংখ্যা ১৭ লক্ষ জন সদস্য হয়েছে। চার্চ অব পেন্টিকস্ট মন্ডলীতে মোট সারা পৃথিবীতে সকল মহাদেশে ১৩,০০০ মন্ডলী আছে।

লাইকোস: লে-ব্যক্তি, লে-লোকেরা, লে-পালক, সেচ্ছাসেবক

১৯৫২ খ্রীষ্টাব্দে, পাস্টর যোশিয় আকিনদায়োমি নাইজেরিয়াতে রিডিম্ড খ্রীষ্টিয়ান চার্চ আব গড স্থাপন করেন।

জেনারেল ওভারসীয়ার রেভা. ই.এ. আদেবয়ের নেতৃত্বে এই ডিনোমিনেশনটি ১৪০টিরও বেশী দেশে মন্ডলী স্থাপন করতে পেরেছে যেখানে তাদের উপস্থিতির সংখ্যা দশ লাখেরও উপরে।

প্রকৃতই এগুলো বিরাট অর্জন এবং এগুলো সম্ভব হয়েছে লে-মানুষদের অবদানের মধ্য দিয়ে।

পার্থিব জগতে মহান অর্জন

১.      সুমহান গণতন্ত্র সাধারণ মানুষদেরকে সুযোগ দেয় কাজ করার এবং সরকার পরিবর্তনের, যদি তারা চায়।

গণতন্ত্র হলো সাধারণ মানুষের শক্তি অগ্রহণযোগ্য অবস্থার মধ্যে বাস করতে অসম্মত হওয়ার জন্য।

গণতন্ত্র হলো একটি দেশের মধ্যেসাধারণ মানুষের অংশগ্রহণ এবং প্রভাব।

সকল সাধারণ মানুষের জন্য সমান সুযোগের নীতির উপরে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত।

২.      সুমহান পরাশক্তিও লে-মানুষদের দ্বারা প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল।

সাধারণ বা লে-মানুষের ইতিহাস সৃষ্টির জন্য শক্তির উল্লেখযোগ্য উদাহরণ হলো আমেরিকান রিভলিউশান। সাধারণ মানুষেরাই পরাশক্তির জন্ম দিয়েছে বিগত শতাব্দীর শেষে এসে, আমেরিকান রিভলিউশান একটি সফল পরীক্ষা রূপে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল যা মুষ্টিমেয় কয়েকজনের দ্বারা বিশ্ব নিয়ন্ত্রিত হওয়ার বদলে অনেকের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হবার দিকে ঘুরে গেল।

এই পরিবর্তনটি ‘সনস অব লিবার্টি-র’ মত ছোট ছোট আন্দোলনের দল দ্বারাই পরিচালিত হয়েছিল। এই সমস্ত সংস্থাগুলো কোন ধনী বা শক্তিশালী জমিদারদের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয় নি, কিন্তু গড়পড়তা একই স্তরের সামাজিক অবস্থার সাধারণ লোকেরা একত্রে মিলিত হয়ে পরিবর্তনের বীজ বপন করেছিল।

লাইকোস: লে-ব্যক্তি, লে-লোকেরা, লে-পালক, সেচ্ছাসেবক

৩.     বারাক ওবামার ঐতিহাসিক নির্বাচনে বিজয় সাধারণ লে-মানুষদের মধ্য দিয়েই হয়েছে।

২০০৮ খ্রীষ্টাব্দের মে মাসে, যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম কালো প্রেসিডেন্ট দেশের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের জন্য ডেমোক্রাটিক পার্টির মনোনয়ন লাভ করে।

যদিও দেশের ধনী ও প্রভাববিস্তারকারী ডেমোক্রাটরা ক্লিনটনকেই সমর্থন করতেন, ও লক্ষ লক্ষ ডলারের যোগান দিতেন, ওবামা সাধারণ মানুষদের শক্তি ব্যবহার করে ইতিহাসে অন্য যে কোন প্রেসিডেন্টের চাইতে বেশী পরিমানে অর্থ তুলতে সমর্থ হয়েছিলেন।

তিনি ৮০ মিলিয়ন ডলারের চাইতেও বেশী পরিমানে অর্থ তুলেছিলেন যার বেশীরভাগই ছোট পরিমানে অর্থ যোগানদাতাদের দ্বারা তোলা হয়েছিল।

অধ্যায় ২

যখন কোন লে-ম্যান ও স্বেচ্ছাসেবক না থাকে তখন কী হয়

১.      আপনি যদি আপনার পরিচর্যা কাজে কোন স্বেচ্ছা সেবকদেরকে কাজ করতে অনুমতি না দেন, তাহলে আপনি মন্ডলীতে উৎসর্গের খ্রীষ্টির নীতিকে ধ্বংস করবেন।

কেননা যে কেহ আপন প্রাণ রক্ষা করিতে ইচ্ছা করে, সে তাহা হারাইবে, আর যে কেহ আমার নিমিত্তে আপন প্রাণ হারায়, সে তাহা পাইবে।

মথি ১৬:২৪

খ্রীষ্ট বিশ্বাসের প্রতীক হলো ক্রুশ। ক্রুশ দ্বারা আমরা উৎসর্গ ও মৃত্যুর কথা শুনি। ঈশ্বর অব্রাহামকে আহ্বান করে তার কাছে যা সব চাইতে মূল্যবান ছিল অর্থাৎ তার পুত্রকে- প্রভুর জন্য উৎসর্গ করতে বললেন। আপনি এমন কোন লোকের কথায় কান দেবেন না যিনি বলেন যে দুঃখভোগ করা, উৎসর্গ করা, হারান ও মৃত্যুবরণ করার দিন শেষ হয়ে গেছে। দুঃখভোগ করা, উৎসর্গ করা, হারান ও মৃত্যুবরণ করার দিন আরম্ভ হয়েছে। ঈশ্বর আমাদের কাছে আমাদের যা শ্রেষ্ঠ ধন আছে তার উৎসর্গ করতে বলছেন যেন আমরা তাঁকে সেবা করতে পারি। মন্ডলীতে এমন অনেক লোক দেখা যাচ্ছে যারা মনে করেন যে ঈশ্বর আমাদেরকে আরোও উৎসর্গ করতে আহ্বান করছেন। খ্রীষ্ট বিশ্বাস উৎসর্গ করার একটি বিশ্বাস বা ধর্ম। খ্রীষ্ট বিশ্বাস ক্রুশের উপর ভিত্তি করে স্থাপিত। খ্রীষ্ট ধর্মে এই বিশ্বাস করা হয় যেন আপনি আপনার বর্তমান জীবন হারান ও নতুন জীবন লাভ করেন।

বিভিন্ন ধরণের লোকের জন্য বিভিন্ন উৎসর্গ (বলি)

কিন্তু কোন কোন লোক এই ধারণাকে অস্বীকার করে যে ঈশ্বর আমাদের প্রত্যেককে আমাদের ‘ইসহাক’ কে উৎসর্গ করতে বলেন। কিন্তু ঈশ্বর যোষেফকে তার সন্তানদেরকে উৎসর্গ করতে বলেন নি। তিনি যাকোব বা ইসহাককেও

যখন কোন লে-ম্যান ও স্বেচ্ছাসেবক না থাকে তখন কী হয়

তাদের সন্তানদেরকে উৎসর্গ করতে বলেন নি। রাজা দায়ূদ ঈশ্বরের