শ্রবণের নিপুণতা

…..যেন তোমরা পরীক্ষা করিয়া জানিতে পার, ঈশ্বরের ইচ্ছা কি, যাহা উত্তম ও প্রীতিজনক ও সিদ্ধ।

রোমীয় ১২:২

ঈশ্বরের ইচ্ছাকে নিখুঁত এবং অসম্পূর্ণতা দিয়ে বর্ণনা করা যেতে পারে। ঈশ্বরের অসম্পূর্ণ ইচ্ছাকে ত্রুটিপূর্ণ ইচ্ছা বলা হয় কারণ এটি যদিও ঈশ্বরের সঠিক ইচ্ছার মত বলে মনে হয় কিন্তু আসলে ঈশ্বর তা চান না।

ঈশ্বরের নিখুত ইচ্ছা পরিপূর্ণ, পরিপক্ক ও এতে ঈশ্বরের পূর্ণ ইচ্ছা রয়েছে। ঈশ্বরের অসম্পূর্ণ ইচ্ছা সেটি যা তিনি মানুষকে তার প্রাথমিক ইচ্ছা না হওয়ার সত্ত্বেও করতে দেন।

ঈশ্বরের নিখুঁত ইচ্ছা

১।  ঈশ্বরের নিখুঁত ইচ্ছা হচ্ছে সেই স্থান যেখানে ঈশ্বর চান আপনি থাকেন। ঈশ্বর সন্তুষ্ট হন যখন আপনি তার নিখুঁত ইচ্ছার মধ্যে থাকেন এবং তিনি উদ্দীপিত থাকেন যখন আপনার নাম সেই ইচ্ছার মধ্যে উল্লিখিত থাকে।

২।  ঈশ্বরের নিখুঁত ইচ্ছার মধ্যে আপনাকে যথাযথ স্থানে খুব ভালভাবে রাখা হয়েছে এবং ঈশ্বরের এই মূল ইচ্ছায় মধ্যে আপনি উপযুক্ত।

৩।  ঈশ্বরের নিখুঁত ইচ্ছার মধ্যে আপনার সেই সমস্ত প্রয়োজন মিটে যার জন্য আপনি পরিকল্পিত।

ঈশ্বরের অসম্পূর্ণ ইচ্ছা

১।  ঈশ্বরের আসল এবং নিখুঁত পরিকল্পনার বিরুদ্ধে বিদ্রোহী মনোভাব এবং প্রত্যাখ্যানের ফলে ঈশ্বর তাঁর সন্তানদেরকে তাঁর অসম্পূর্ণ ইচ্ছার মধ্য দিয়ে যেতে দেন।

শ্রবণের নিপুণতা

২।  যখন আপনি ঈশ্বরের অসম্পূর্ণ ইচ্ছার মধ্য দিয়ে যান তখন ঈশ্বর সন্তুষ্ট হন না। কিন্তু তিনি শুধুমাত্র আপনার প্রতি অমায়িক হন, আপনার প্রতি ধৈর্য্য ধরেন এবং আপনাকে সময় দেন যাতে আপনি অনুতপ্ত হন।

৩।     ঈশ্বরের অসম্পূর্ণ ইচ্ছার মধ্যে আপনি তাঁর অনুগ্রহ পেতে পারেন কিন্তু প্রভুর প্রতি আপনার কাজে আপনি অসম্পূর্ণ থেকে যান এবং আপনার জীবনের জন্য ঈশ্বরের মূল উদ্দেশ্য পূর্ণ হয় না।

৪। ঈশ্বরের অসম্পূর্ণ ইচ্ছা হচ্ছে সেই স্থান যেখানে আপনার অবস্থান বেমানান এবং কাজের জন্যও আপনি অযোগ্য।

ঈশ্বরের নিখুঁত ইচ্ছা থেকে

অসম্পূর্ণ ইচ্ছাতে পরিবর্তিত হওয়া

পুরো বাইবেলে আমরা এই উদাহরণ দেখতে পাই যে মানুষ যা কিছু করতে চেয়েছেন তা তাদের জীবনের জন্য ঈশ্বরের  নিখুঁত ইচ্ছা না হওয়ার সত্ত্বেও ঈশ্বর তাদের করতে দিয়েছেন। ঈশ্বরের লোকেরা অনেকবার ঈশ্বরের নিখুঁত ইচ্ছার বিরুদ্ধে বিদ্রোহী হয়ে উঠেছেন এবং ঘৃণা প্রকাশ করেছেন। কিন্তু ঈশ্বর তাদের সরাসরি বিচারের মধ্যে দিয়ে নিয়ে না গিয়ে তিনি তাদেরকে তাঁর অসম্পূর্ণ (অনুপযুক্ত, অবৈধ, অযোগ্য, অনাদর্শ) ইচ্ছার মধ্যে দিয়ে বিপথে যেতে দিলেন এবং এরপর তাদের গুজব শুনলেন, তাদের বিদ্রোহের জন্য পরাজয়ের মধ্যে পরতে দিলেন!

এই বইতে আপনি দেখতে পাবেন, কিভাবে ঈশ্বর মানুষকে রাজা বেছে নেওয়ার অনুমতি দেন কিন্তু সেই রাজাদেরই ব্যবহার করে তাদের শাস্তি দেন।

তিনি মানুষকে সমৃদ্ধ হওয়ার অনুমোদন দেন কিন্তু এরপরে তাদের হৃদয়ে ভ্রান্তি ও দারিদ্রতা পাঠান। তিনি লোকদের প্রতিমা বানাতে দেন এবং পরে তাদের ধ্বংসও করেন।

তিনি ভাববাদীকে লক্ষ্যে পৌঁছানোর অনুমোদন দেন কিন্তু পরে তিনি গাধা পাঠিয়ে তাকে ধমকও দেন।

ঈশ্বর লোকদেরকে তাঁর অসম্পূর্ণ ইচ্ছার দ্বারা বিপথে যাওয়ার অনুমোদন দেওয়ার মধ্য দিয়ে কিন্তু তিনি নিজেকে অস্বীকার করেন না। এটি হচ্ছে তাঁর

ঈশ্বরের নিখুঁত এবং অসম্পূর্ণ ইচ্ছা

নিখুঁত ইচ্ছার উপর বিদ্রোহ, জেদীতা ও প্রত্যাখ্যান এর প্রতি সাড়া। অবশেষে সমস্ত মানুষ ঈশ্বরের যথাযথ, উপযোগী ও উদ্ভাবনী বিচার গ্রহন করে।

কিছু মানুষ এই অসম্পূর্ণ ইচ্ছা কে অনুমতিসূচক ইচ্ছা বলে থাকে। ঈশ্বরের এই অসম্পূর্ণ ইচ্ছা হচ্ছে একটি জায়গা যেখানে অনেকে সুসমাচার কাজে সহায়তা করে। কিছু তারা তাদের সারাজীবন ঈশ্বরের অসম্পূর্ণ ইচ্ছায় মধ্যে যাপন করে।

ঈশ্বরের অসম্পূর্ণ ইচ্ছার মধ্যে তাদের সবকিছু সঠিক বলে মনে হয়। তাদের প্রত্যেকটি লক্ষ্যের উন্নতি হয় এবং দেখতে মনে হয় তারা যা কিছু করে সেই সমস্ত কিছুর উপর ঈশ্বরের অনুগ্রহ রয়েছে। কিন্তু প্রাচুর্য ও দৃশ্যমান উন্নতি মানে এই নয় যে ঈশ্বর আপনার প্রতি সন্তুষ্ট।

আমরা অনেকে দৃশ্যমান অনুগ্রহ এবং যেটাকে মানুষ "আশীর্বাদ" বলে থাকে, এসব দ্বারা প্রতারিত হই।

অর্থ এবং প্রাচুর্যতা কখনওই ঈশ্বরের আপনার প্রতি সন্তুষ্টির প্রতীক নয়। শয়তানও তাদেরকে অর্থ দেয় যারা তার সেবা করে। শয়তান যীশুকে বলেছিল তার সামনে নত হতে তাহলে সে যীশুকে এই পুরো পৃথিবী দিবে।

কোন অর্থ বা শারারিক কিছু না কিন্তু ঈশ্বরের উপস্থিতি এবং পবিত্র আত্মার রবের অনুসন্ধান করা আমাদের প্রয়োজন।

যখন আপনি কোন যাজক বা আত্মিক সহায়কের সাথে যোগাযোগ করেন তখন আপনাকে অবশ্যই তাকিয়ে দেখতে হবে যে ঈশ্বরের উপস্থিতি তার সঙ্গে আছে কি নেই। আপনাকে অবশ্যই তাকিয়ে দেখতে হবে ঈশ্বরের রব ও প্রভুর বাক্য উপস্থিত আছে কি নেই।

বাইবেলে ঈশ্বরের লোকদের ঈশ্বরের নিখুঁত ইচ্ছার কাছ থেকে দূরে সরে গিয়ে অসম্পূর্ণ ইচ্ছার মধ্যে প্রবেশ করার অনেক উদাহরণ ছরিয়ে রয়েছে। যারা ঈশ্বরের অসম্পূর্ণ ইচ্ছার মধ্যে আছে তাদেরকে ঈশ্বর আশীর্বাদ করছেন ঠিকই কিন্তু তিনি তাদের প্রতি সন্তুষ্ট নন।

আসুন যারা ঈশ্বরের অসম্পূর্ণ ইচ্ছার মধ্যে প্রবেশ করেছে তাদের কিছু উদাহরণ দেখি।

শ্রবণের নিপুণতা

১. ইস্রায়েল জোর করে রাজা নির্বাচনের মধ্য দিয়ে ঈশ্বরের অসম্পূর্ণ ইচ্ছার মধ্যে প্রবেশ করে।

রাজা নির্বাচন করা ইস্রায়েলের জন্য ঈশ্বরের যথাযথ ও পরিপক্ক ইচ্ছা ছিল না। কিন্তু ঈশ্বর রাজি হলেন এবং শমূয়েলকে ব্যাক্তিগতভাবে বললেন যে লোকেরা তাঁকে প্রত্যাখ্যান করেছে।

রাজা নির্বাচন করা ঈশ্বরের আসল ইচ্ছা ছিল না কিন্তু তারপরও ঈশ্বর রাজি হলেন। আপনি এখানে দেখতে পাবেন যে এই ব্যবস্থা ভাল দিকে যাচ্ছিল না এবং সেই রাজাদের প্রভাবে ইস্রায়েলের শিশুরা সবচেয়ে বেশী কষ্টভোগ করেছিল।

তাই এটি গুরুত্বপূর্ণ যখন ঈশ্বর কোন নিদিষ্ট বিষয়ে স্পষ্ট ভাবে অনুমোদন দেন তখন ভুল দিকে না যাওয়া। ঈশ্বরের প্রকৃত হৃদয় তাদের কাছে প্রকাশিত হয় যারা খাটি হৃদয় নিয়ে তাঁর কাছে আসে।

আমরা এই কাজটি সবসময় করি, আমরা যখন সবার সামনে থাকি তখন নৈতিক সত্য কথাগুলা বলি কিন্তু আমদের আসল হৃদয় আমরা প্রকাশ করি না। কিন্তু আমদের অবশ্যই এই বিষয়ে ঈশ্বরের আসল মন ও হৃদয় অনুসন্ধান করা শিখতে হবে।

ঈশ্বর কষ্ট পেয়েছিলেন যখন তিনি শমূয়েলকে রাজা নির্বাচন করার অনুমতি দিয়েছিলেন। তিনি জানতেন যে তিনি মানুষের দ্বারা প্রত্যাক্ষীত হচ্ছিলেন। তিনি জানতেন লোকেরা শমুয়েলের পুত্রদের ব্যবহার করছিলেন তাঁকে প্রত্যাখ্যান করার ছুতা হিসেবে। ঈশ্বর ইস্রায়েলের অনুরোধে সম্মতি দিলেন কিন্তু তাদের সাথে কোন কিছুই ভাল হয় নি। একটু আপনার জীবনের সেই সমস্ত মুহূর্তের দিকে তাকান যখন ঈশ্বর না চাওয়ার সত্ত্বেও আপনাকে সম্মতি দিয়েছেন।

অতএব ইস্রায়েলের সমস্ত প্রাচীনবর্গ একত্র হইয়া রামাতে শমূয়েলের নিকট আসিলেন।

আর তাহাকে কহিলেন দেখুন, আপনি বৃদ্ধ হইয়াছেন, এবং আপনার পুত্রেরা আপনার পথে চলে না; এখন অন্য সকল জাতির ন্যায় আমাদের বিচার করিতে আপনি আমাদের উপরে একজন রাজা নিযুক্ত করুন।

ঈশ্বরের নিখুঁত এবং অসম্পূর্ণ ইচ্ছা

কিন্তু, আমাদের বিচার করিতে আমাদিগকে একজন রাজা দিউন; তাহাদের এই কথা শমূয়েলের মন্দ বোধ হইল; তাহাতে শমূয়েল সদাপ্রভুর কাছে প্রার্থনা করিলেন।

তখন সদাপ্রভু শমূয়েলকে কহিলেন, এই লোকেরা তমার কাছে যাহা যাহা বলিতেছে, সেই সমস্ত বিষয়ে তাহাদের বাক্কে কর্ণপাত কর; কেননা তাহারা তোমাকে অগ্রাহ্য করিল এমন নয়, আমাকেই অগ্রাহ্য করিল, যেন আমি তাহাদের উপরে রাজত্ব না করি।

১ম শমূয়েল ৮ː৪-৭

২. বিলিয়ম ঈশ্বরের নিখুঁত ইচ্ছা থেকে বের হয়ে গিয়েছিলেন যখন তিনি মোয়াবের রাজার কাছে অবিরত ভাববানী করার সুযোগের জন্য বিনতি করেছিলেন।

ঈশ্বর বিলিয়ামকে আগের সুস্পষ্ট করে দিয়েছিলেন যে তিনি চান না মোয়াবের রাজা বালাক এর জন্য বিলিয়াম কোন কিছু করুক। যে কোন প্রকারে বিলিয়াম সেই টাকা নিতে চেয়েছিল যার জন্য বালাক তাঁকে প্রস্তাব দিয়েছিল। সে ঈশ্বরকে চাপ দিচ্ছিল যাতে ঈশ্বর তাকে রাজার সাথে কথা বলার অনুমতি দেয়। অবশেষে ঈশ্বর তাকে যেতে বলল। তাদের সাথে কিভাবে কথা বলতে হবে ঈশ্বর এমনকি সেই বিষয়েও তাকে পরামর্শ দিল। সম্প্রতি খ্রীষ্ট বিশ্বাসীরা এই বিষয়টিকে ঈশ্বরের ইচ্ছা হিসেবে নিয়েছে। এই অংশটি আমাদের সতর্ক করার জন্য যে যখন তিনি জানেন যে আমরা বিদ্রোহে পরিপূর্ণ তখন তিনি হয়ত বা আমাদের নিজেদের ইচ্ছায় চলতে অনুমোদন দেন।

পরে ঈশ্বর বিলিয়মের নিকটে উপস্থিত হইয়া কহিলেন, তোমার সঙ্গে এই লোকেরা কে? তাহাতে বিলিয়ম ঈশ্বরকে কহিল, মোয়াবের রাজা শিপ্পরের পুত্র বালাক আমার নিকতে বলিয়া পাঠাইয়াছেন,

দেখ, মিসর হইতে বহির্গত এই জাতি ভূতল আচ্ছাদন করিয়াছে। এখন তুমি আসিয়া আমার নিমিত্তে শাপ দেও, হয়ত আমি তাহাদের সহিত যুদ্ধ করিয়া তাহাদিগকে দূর করিয়া দিতে পারিব।

তাহাতে ঈশ্বর বিলিয়ামকে কহিলেন, তুমি তাহাদের সঙ্গে যাইও না, সেই জাতিকে শাপ দিও না, কেননা তাহারা আশীর্বাদযুক্ত।

শ্রবণের নিপুণতা

পরে বিলিয়ম প্রাতঃকালে উঠিয়া বালাকের অধ্যক্ষগণকে কহিল, তোমরা স্বদেশে চলিয়া যাও, কেননা তোমাদের সহিত আমার যাত্রায় সদাপ্রভু অসম্মত হইলেন।

তাহাতে মোয়াবের অধ্যক্ষগণ উঠিয়া বালাকের নিকটে গিয়া কহিল, আমাদের সহিত আসিতে বিলিয়ম অসম্মত হইলেন।

পরে বালাক আবার তাহাদের অপেক্ষা বহুসংখ্যক ও সম্ভ্রান্ত অন্য অধ্যক্ষকে প্রেরণ করিলেন।

তাহারা বিলিয়মের নিকটে আসিয়া তাহাকে কহিল, শিপ্পরের পুত্র বালাক এই কথা বলেন, বিনয় করি, আমার নিকটে আসিতে আপনি কিছুতেই নিবারিত হইবেন না।

কেননা আমি আপনাকে অতিশয় সম্মানিত করিব। আপনি আমাকে যাহা যাহা বলিবেন, আমি সকলই করিব; অতএব বিনয় করি, আপনি আসিয়া আমার নিমিত্তে সেই লোকদিগকে শাপ দিউন।

তখন বিলিয়ম বালাকের দাসদিগকে উত্তর করিল, যদ্যপি বালাক রৌপ্য ও স্বর্ণে পরিপূর্ণ আপন গৃহ আমাকে দেন, তথাপি আমি অল্প কি অধিক কিছু করিবার জন্য আমার ঈশ্বর সদাপ্রভুর আজ্ঞা লঙ্ঘন করিতে পারিব না।

এক্ষনে বিনয় করি, তোমরাও এই স্থানে রাত্রি যাপন কর, সদাপ্রভু আমাকে আবার যাহা বলিবেন, তাহা আমি জানিব।

পরে ঈশ্বর রাত্রিকালে বিলিয়মের নিকটে আসিয়া তাহাকে কহিলেন, ওই লোকেরা যদি তোমাকে ডাকিতে আসিয়া থাকে, তুমি উঠ, তাহাদের সহিত যাও; কিন্তু আমি তোমাকে যাহা বলিব কেবল তুমি তাহাই করিবে।

তাহাতে বিলিয়ন প্রাতঃকালে উঠিয়া আপন গর্দভী সাজাইয়া মোয়াবের অধ্যক্ষদের সহিত গমন করিল।

পরে তাহার গমনে ঈশ্বরের ক্রোধ প্রজ্বলিত হইল, এবং সদাপ্রভুর দূত তাহার বিপক্ষরূপে পথের মধ্যে দাঁড়াইলেন। সে আপন গর্দভীতে চরিয়া যাইতেছিল, এবং তাহার দুই দাস তাহার সঙ্গে ছিল।

গণনাপুস্তক ২২ː৯-২২

ঈশ্বরের নিখুঁত এবং অসম্পূর্ণ ইচ্ছা

৩.      ইস্রায়েলের সন্তানরা ঈশ্বরের নিখুঁত ইচ্ছা থেকে বের হয়ে গিয়েছিল যখন তারা লোভে উন্নতির পিছনে ছুটছিল।

তাহারা ত্বরায় তাহার কার্য সকল ভুলিয়া গেল, তাহার মন্ত্রনার অপেক্ষায় রহিল না; কিন্তু প্রান্তরে অত্যন্ত লোভ করিল, মরুভূমিতে ঈশ্বরের পরীক্ষা করিল।

তাহাতে তিনি তাহাদের প্রার্থিত তাহাদিগকে দিলেন, কিন্তু তাহাদের প্রানে ক্ষীণতা পাঠাইলেন।

গীতসংহিতা ১০৬ː১৩-১৫

ইস্রায়েলের সন্তানেরা আমাদের সম্প্রতিক মণ্ডলীর মত, যারা অর্থের প্রতি লোভী। ঠিক এই রকমই সেই দিন গুলোতে হয়েছিল, ঈশ্বর তাদের উন্নতির জন্য প্রচারক পাঠিয়েছিলেন যারা ঈশ্বরের বাক্য ব্যবহার করেছিলেন যাতে পার্থিব প্রয়োজনগুলো বৈধ উপায়ে মেটানো যায়।

উন্নতির বিষয়ে আকর্ষণীয় ভাবে খুব অতিমাত্রয়ায় গুরুত্ব দেওয়ায় এটিকে ঈশ্বরের ইচ্ছা বলে মনে হতে পারে। বিশাল ভিড় এর উপস্থিতি এবং মিনীসট্রির দৃশ্যমান উন্নতিগুলো এইরূপ ভাব প্রকাশ করে যে ঈশ্বর এইসব  কিছু নিয়ে সন্তুষ্ট।

এটি এই রকম মনে হয়েছিল যে ঈশ্বর ইস্রায়েলজাতির উন্নতি করার জন্য হৃদয়য়ের আকাঙ্ক্ষা শুনলেন কিন্তু তারা ঈশ্বরের অসম্পূর্ণ ইচ্ছার মধ্যে ছিলেন কারণ ঈশ্বর তাদের উন্নতির লোভ এর পিছনে দৌড়ানোর জন্য শাস্তি দিয়েছিলেন। এবং সেই শাস্তি হচ্ছে তাদের আত্মার দারিদ্রতা।

ঈশ্বর তাদের শাস্তি দিতেন না যদি তারা সঠিক কাজ করতো।

ঈশ্বর তাঁর সন্তানদের উন্নতি চান কিন্তু ভুল কারনে বা ভুল উপায়ে উন্নতি চান না। ঈশ্বর তাদের উন্নতির জন্য অনুমোদন দিলেন কারণ ঈশ্বর উন্নতির বিপক্ষে না। বর্তমান সময়ে ঈশ্বর তাঁর মণ্ডলীর উন্নতির জন্য অনুমোদন দিচ্ছেন কিন্তু এখন তা আত্মার দারিদ্রতা, আত্মিক অগভীরতা, রোগবালাই, বিবাহবিচ্ছেদ, ব্যাভিচার ও সমকামিতা সাথে যুক্ত বলে মনে হচ্ছে। আমরা কি ঈশ্বরের কাছ থেকে চাচ্ছি এই বিষয়ে আমাদের সাবধান হওয়া উচিত কারণ

শ্রবণের নিপুণতা

আমরা অবশ্যই সেই বিষয়ে শাস্তি পেতে আনন্দবোধ করবো না যা আমরা জোরাজোরি করে নিজেদের মত করে চাচ্ছি।

৪.  ইস্রায়েলের সন্তানেরা ঈশ্বরের অসম্পূর্ণ ইচ্ছার মধ্যে প্রবেশ করলেন যখন তারা হারনকে বাছুরের মূর্তি বানাতে করলেন।

যেভাবে তারা হারনকে দেবতা বানিয়ে তাদেরকে পরিচালনা করার জন্য দাবি করেছিল এতে মনে হচ্ছে ইস্রায়েলীয়রা তাদের নিজেদের মত চলতে চেয়েছিল।

যখনই হারন তাদের জন্য বাছুর বানিয়েছিল, তারা চিন্তা করেছিল যে ঈশ্বর নতুন একটি ধর্ম স্থাপন করেছেন যেখানে মূর্তি পুজা করা যাবে।

ইস্রায়েলজাতি হৈহুলো করে এই নতুন ধর্ম উদযাপন করেছিল এটা ধরে নিয়ে যে ঈশ্বর এই ধর্ম মেনে নিয়েছেন কারণ হারুনও এর সাথে লিপ্ত।

যদিও মনে হচ্ছিল তাদের পরিচালনা দেওয়ার জন্য ঈশ্বরের লোকরা ছিল কিন্তু তারা ঈশ্বরের নিখুঁত ইচ্ছার মধ্যে ছিল না। তারা নিজেদের শাস্তি নিজেরা ডেকে এনেছিল ঈশ্বরের অসম্পূর্ণ ইচ্ছার মধ্যে থাকার কারনে।

পর্বত হইতে নামিতে মোশির বিলম্ব হইতেছে দেখিয়া লোকেরা হারনের নিকটে একত্র হইয়া তাহাকে কহিল, উঠুন, আমাদের অগ্রগামী হইবার জন্য মাদের নিমিত্ত দেবতা নিরমান করুন, কেননা যে মোশি মিসর দেশ হইতে আমাদিগকে বাহির করিয়া আনিয়াছেন, সেই ব্যক্তির কি হইল, তাহা আমরা জানি না। তখন হারন তাহাদিগকে কহিলেন, তোমরা আপন আপন স্ত্রী ও পুত্রকন্যাগনের কর্ণের সুবর্ণ কুণ্ডল খুলিয়া আমার কাছে আন।

তাহাতে সমস্ত লোক তাহাদের কর্ণ হইতে সুবর্ণ কুণ্ডল সকল খুলিয়া হারনের কাছে আনিলেন।

তখন তিনি তাহাদের হস্ত হইতে তাহা গ্রহন করিয়া শিল্পাস্থ্রে গঠন করিলেন, এবং একটি ঢালা গোবৎস নিরমান করিলেন; তখন লোকেরা বলিতে লাগিল, হে ইসরায়েল, এই তমার দেবতা, যিনি মিসর দেশ হইতে তোমাকে বাহির করিয়া আনিয়াছেন।

যাত্রাপুস্তক ৩২:১-৪

ঈশ্বরের নিখুঁত এবং অসম্পূর্ণ ইচ্ছা

তাহারা হোরেবে এই গোবৎস নির্মাণ করিল, ছাচে ঢালা প্রতিমার কাছে প্রণিপাত করিল।

এইরুপে তৃণভোজী গোরুর প্রতিমার সহিত তাহারা আপনাদের গৌরব পরিবর্ত করিল।

তাহারা আপন ত্রাণকর্তা ঈশ্বরকে ভুলিয়া গেল, যিনি মিশরে বিবিধ মহৎ কার্য করিয়াছিলেন;

হামের দেশে নানা আশ্চর্যক্রিয়া সূফ সাগরের ধারে নানা ভয়ঙ্কর  কার্য করিয়াছিলেন।

অতএব তিনি কহিলেন, উহাদিগকে সংহার করিতে হইবে; কিন্তু তাহার মনোনীত ব্যক্তি মোশি তাহার সাক্ষাতে ভঙ্গস্থানে দাঁড়াইলেন, তাহার কোপ ফিরাইবার জিন্ন দাঁড়াইলেন, পাছে তিনি তাহাদিগকে