পরিচর্যার কৌশল
()
About this ebook
একটি শিল্প চর্চা করার অর্থ হচ্ছে একটি গুণ বা দক্ষতার চর্চা করা। বাইবেল আমাদের বলে গুণবিশিষ্ট মানুষেরাই অনুগ্রহ লাভ করে। পরিচর্যা কাজের জন্য প্রয়োজন বিশেষ দক্ষতা।
“পরিচর্যার কৌশল” শীর্ষক এই নতুন বইটি পরিচর্যা কাজের জন্য আকাঙ্ক্ষী সমস্ত মানুষের জন্য এক অপরিহার্য সম্পদ। এখানে স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে পরিচর্যা কাজে কোনটি সঠিক এবং কোনটি ভুল, পরিচর্যা কাজ আসলে কী, একজন পরিচর্যাকারী হিসেবে আপনার কেমন হওয়া উচিত এবং কীভাবে পরিচর্যাকারী হিসেবে দায়িত্ব পালন করতে হয়।
কখনো কি ভেবেছেন পরিচর্যা কাজের সঠিক পদ্ধতি কী? ড্যাড় হিউয়ার্ড-মিলস এর এই অসাধারণ বইটি আপনাকে ঈশ্বরের আহ্বান অনুসারে চলার জন্য অনুপ্রাণিত করবে এবং নিজেকে পূর্ণাঙ্গভাবে পরিচর্যা কাজে নিয়োজিত করার দিকনির্দেশনা দান করবে।
Dag Heward-Mills
Bishop Dag Heward-Mills is a medical doctor by profession and the founder of the United Denominations Originating from the Lighthouse Group of Churches (UD-OLGC). The UD-OLGC comprises over three thousand churches pastored by seasoned ministers, groomed and trained in-house. Bishop Dag Heward-Mills oversees this charismatic group of denominations, which operates in over 90 different countries in Africa, Asia, Europe, the Caribbean, Australia, and North and South America. With a ministry spanning over thirty years, Dag Heward-Mills has authored several books with bestsellers including ‘The Art of Leadership’, ‘Loyalty and Disloyalty’, and ‘The Mega Church’. He is considered to be the largest publishing author in Africa, having had his books translated into over 52 languages with more than 40 million copies in print.
Reviews for পরিচর্যার কৌশল
0 ratings0 reviews
Book preview
পরিচর্যার কৌশল - Dag Heward-Mills
অধ্যায় ১
অনুতাপ বিহীন অনুগ্রহ এবং ঈশ্বরের আহবান
প্রথম আহবান
সদাপ্রভুর এই বাক্য অমিত্তয়ের পুত্র যোনার কাছে উপস্তিত হইল, তুমি উঠ, নীনবীতে, সেই মহানগরে যাও, আর নগরের বিরুদ্ধে ঘোষনা কর, কেননা তাহাদের দুষ্টতা আমার সম্মুখে উঠিয়াছে।
যোনা ১:১-২
দ্বিতীয় আহবান
পরে দ্বিতীয়বার সদাপ্রভুর বাক্য যোনার কাছে উপস্থিত হইল; তিনি কহিলেন, তুমি উঠ, নীনবীতে, সেই মহানগরে যাও, আর আমি তোমাকে যাহা ঘোষনা করিতে বলি, তাহা সেই নগরের উদ্দেশে ঘোষনা কর।
যোনা ৩:১-২
ঈশ্বর একজন কৃপার ঈশ্বর! তিনি আপনাকে বাধ্য হবার জন্য দ্বিতীয় সুযোগ দিবেন, যোনা ছিলেন এমন একজন ব্যক্তি যিনি ঈশ্বরের রব শ্রবন ও তাতে বাধ্য থাকার জন্য দ্বিতীয় সুযোগ পাবার উদাহরন স্বরুপ। কখনও কখনও আমরা মাত্র একবার সুযোগ পাই।
দ্বিতীয় সুযোগের ঈশ্বর
সম্ভবত, ঈশ্বর সর্বদাই চান যেন আপনি মন্ডলীতে কাজ করেন এবং এই কারনেই তিনি আপনাকে সৃষ্টি করেছেন। হয়ত আপনি ঈশ্বরের সেই আহবান থেকে পালিয়ে যাচ্ছেন। কিন্তু ঈশ্বর পুনরায় আপনার সাথে কথা বলছেন। ঈশ্বর যোনার সাথে দ্বিতীয়বার কথা বলেছেন। এই প্রথম এবং দ্বিতীয়বার আহবানের মধ্যকার সময়ে যোনা বহু অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হয়েছেন। তিনি জীবনে অনেক ঝড়ের অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে গিয়েছেন এবং বিশালাকার তিমি মাছের পেটে বন্দীও হয়েছেন। হয়তবা এমন সব কাঠোরতর অভিজ্ঞতার পরই যোনা ঈশ্বরের রব শ্রবনে প্রস্তুত হয়েছিলেন। হয়ত যখন অপনি এই বইটি পড়বেন তখন ঈশ্বর আপনাকে দ্বিতীয় সুযোগটি দিচ্ছেন যেন আপনি ঈশ্বরের গৃহে কাজ করতে পারেন। এখনই সময় যেন আপনি যুদ্ধে সেনাদলে যোগ দিতে পারেন।
আহ্বানে কোন পরিবর্তন নেই
আপনি লক্ষ্য করে দেখেছেন যে প্রথম ও দ্বিতীয় আহবান একই রকম। প্রথম এবং দ্বিতীয় আহবান উভয়তেই যোনাকে একই ঘোষনা করার জন্য নীনবী নগরে পাঠানো হয়েছিল। ঈশ্বরের অনুগ্রহ দান সকল ও তাহার আহবান অনুশোচনা রহিত। (রোমীয় ১১:২৯)
ঈশ্বর কখনই সময়ের পরিক্রমায় নিজ অন্তর পরিবর্তন করেন না। এমনকি আপনি যদি অজস্র ঝড়, তিমির আক্রমন এবং মিথ্যা চারিতা ও প্রতিশ্রুতিহীনতার অভিজ্ঞতার মধ্যে থাকেন তারপরও ঈশ্বর আপনাকে ব্যবহার করবেন। হয়ত আপনার প্রতি ঈশ্বরের প্রথম আহবানের পর দশ বছর পার হয়ে গিয়েছে। কিন্তু এখনও ঈশ্বরের আহবানে বাধ্যতা প্রকাশে আপনার খুব বেশী দেরী হয়নি। আমি আনন্দিত কারন আমি এমন এক ঈশ্বরের পরিচর্যা করি যিনি কখনও তার মন পরিবর্তন করেন না।
ঈশ্বরের আহবানকে গ্রহন করার মাধ্যমে আপনি এমন এক ব্যক্তিতে পরিনত হন যা আপনি নন। প্রভু যীশু পিতরকে মানুষ ধরার জেলেতে পরিনত হবার
সুযোগ দিয়েছিলেন যা পিতর ছিলেন না।
পরিচর্যায় আসা ঈশ্বরের রাজ্যে আপনার বিশেষ কোন অবদান নয়। আপনার ওপর কোন কিছুই নির্ভর করেনা এবং আপনি পরিচর্যার কাজটিকে অবহেলা করলে সেই কাজের কোন কিছুই ধ্বংস হবে না। আমাদের প্রত্যেককেই বিতাড়িত করা যায় আবার প্রতিস্থাপনও করা যায়।
কারণ আমরা সত্যের বিপক্ষে কিছুই করিতে পারি না, কেবল সত্যের স্বপক্ষে করিতে পারি।
২ করিন্থীয় ১৩:৮
শাস্ত্র আমাদের বলে যে ঈশ্বরের বাক্যের সত্যতার বিরুদ্ধে গিয়ে আমরা কিছুই করতে পারব না। আমাদের অনেক বড় বড় ভুল গুলোও সুসমাচারের সত্যতাকে লুকাতে পারবে না। ঈশ্বরের আহবানের প্রতি আমাদের অবহেলা ঈশ্বরের বিজয়ী সেনাদলের কাজের কোন পরিবর্তন ঘটাতে পারে না। বরং পরিচর্যার কাজে ঈশ্বরের আহবান পাওয়া হলো একটি বিশেষ সুবিধা পাওয়া। এ কাজে যোগদানের সুযোগ পেয়ে আমরা সম্মানিত হই। কাজেই এ সুযোগ পেয়ে আপনি যদি মনে করেন আপনি ঈশ্বরের জন্য অসাধারন কিছু করতে যাচ্ছেন তবে সেই চিন্তা থেকে বিরত থাকুন।
পরিচর্যায় যুক্ত হওয়া মানে হলো এমন এক নম্রতার অভিজ্ঞতা যেখানে আপনি ঈশ্বর সম্পর্কে জানতে পারেন এবং তাঁর দয়া পেতে পারেন। যীশু শিষ্যদের বলেছিলেন তাঁকে অনুসরন করবার জন্য যেন তিনি শিষ্যদের বিশেষ ভাবে গঠন করতে পারেন। সার্বক্ষনিক পরিচর্যায় আপনি এমন এক পাত্রে গঠিত হন যা ঈশ্বর ব্যবহার করতে পারেন।
যীশু তাঁহাদিগকে কহিলেন, আমার পশ্চাৎ আইস, আমি তোমাদিগকে মনুষ্যধারী করিব।
মার্ক ১:১৭
সার্বক্ষনিক পরিচর্যায় আপনি নিজ অন্তরকে পুনরায় উজ্জীবিত করে এবং অসংখ্য নম্রতার অভিজ্ঞতার মাধ্যমে রুপান্তরিত হবেন যা আপনার জন্য অপেক্ষায় রয়েছে। সার্বক্ষনিক পরিচর্যা এমন এক যাত্রার শুরু যা আপনাকে
ঈশ্বরের ঘনিষ্টতায় নিয়ে যায়। এটি আপনাকে পরিবর্তন করে এবং নম্রতায় গড়ে তোলে। এই ক্ষুদ্র কাজের বৈশিস্ট এবং পরিচর্যায় খ্রিষ্টে বিশ্বাসী ভাইবোনদের পারস্পরিক সম্পর্ক অবশ্যই আপনাকে নম্র করবে এবং আপনি একজন উত্তম ব্যক্তিতে পরিনত হবেন। এছাড়া বহিরাগতরা যারা সার্বক্ষনিক পরিচর্যা সম্বন্ধে জানেন না তাদের সাথে পারস্পরিক সম্পর্ক আপনাকে ঈশ্বরের আরও নিকটে পরিচালিত করবে।
সার্বক্ষনিক পরিচর্যা কি সম্বন্ধীয় নয়
সার্বক্ষনিক পরিচর্যায় থাকা হলো যখন যীশু আপনাকে মানুষ ধরার জেলেতে পরিনত করেন। পরিচর্যার কাজে বেতন পাবার ব্যাপারটি সার্বক্ষনিক পরিচর্যাকারী হবার জন্য জরুরী নয়।
আপনার বেতনের উৎসটিকে ব্যাংক থেকে মন্ডলীতে নিয়ে যাওয়া সার্বক্ষনিক পরিচর্যার উদাহরণ নয়। সার্বক্ষনিক পরিচর্যা হলো সর্বদিক থেকে বেষ্টিত এমন এক পদক্ষেপ যেখানে আপনি সম্পূর্ণরূপে প্রভুকে অনুসরন করেন। তাঁকে অনুসরন করবার অনেক অর্থ রয়েছে সেই অর্থের কিছু নিচে উল্লেখিত হলো:
সার্বক্ষনিক পরিচর্যা কোন চাকরী পরিবর্তনের বিষয় নয়। এটি হলো সারা জীবনের জন্য প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হওয়া। এটি আপনাকে সামগ্রিক ভাবে পরিবর্তন করে এবং আপনি নতুন ভাবে ঈশ্বরের শক্তিতে রুপান্তরিত হন।
সার্বক্ষনিক পরিচর্যা যে সকল বিষয়ের অন্তভুক্ত নয়:
সার্বক্ষনিক পরিচর্যা কোন সমসাময়িক চাকরীর সুযোগ নয়।
সার্বক্ষনিক পরিচর্যা কোন সহজতর চাকরী নির্বাচনের বিষয় নয়।
সার্বক্ষনিক পরিচর্যা বৃদ্ধকালে কোন অবসর পরিকল্পনার অংশ নয়।
সার্বক্ষনিক পরিচর্যা পুনরায় কর্মী নিয়োগের কোন ব্যবস্থা নয়।
সার্বক্ষনিক পরিচর্যা ছোট ছোট শিশুদের মায়েদের জন্য কোন আশ্রয়স্থান নয়।
সার্বক্ষনিক পরিচর্যা সেই সমস্ত লোকদের জন্য কোন শেষ ইচ্ছা নয় যারা তাদের জীবনের ভাল সময়গুলো অন্য কাজে ব্যয় করেছেন।
সার্বক্ষনিক পরিচর্যা কোন ছদ্মবেশী ব্যবসার পরিকল্পনা নয়। অনেক লোকেরা সার্বক্ষনিক পরিচর্যার কাজকে নিয়মিত বেতন পাবার উদ্দেশ্যে ব্যবহার করে যেখানে তারা পরিচর্যার পাশাপাশি ব্যবসা চালিয়ে যায়। ব্যবসা হলো ব্যবসা এবং পরিচর্যা হলো পরিচর্যা।
সার্বক্ষনিক পরিচর্যার কাজ চাকুরির পাশাপাশি করবার মত কোন কাজ নয়। উচ্চাকাঙ্খা নয়।
সার্বক্ষনিক পরিচর্যার কাজ ধর্ম নিরপেক্ষ উচ্চকাঙ্খা রাখা লোকদের জন্য কোন লাফ দেবার তক্তা নয়।
সার্বক্ষনিক পরিচর্যার কাজ দারিদ্র দূরীকরণের কোন কর্ম-পরিকল্পনা নয়। তবে মাঝে মাঝে পরিচর্যায় এই কাজ অর্থনৈতিক দিক থেকে করা একটি ভাল বিষয়।
ধর্ম নিরপেক্ষ জগত থেকে নিজ পেশাকে মন্ডলীর দিকে নিয়ে যাওয়া আর সার্বক্ষনিক পরিচর্যা করা এক বিষয় নয়। বাইরের জগতে আপনি একজন হিসাব রক্ষককারী হওয়া মানে মন্ডলীতেও আপনি একজন হিসাবরক্ষক কারী হবেন তা নয়।
সার্বক্ষনিক পরিচর্যা নিজ বেতনের উৎসকে স্থানান্তর করার কোন প্রক্রিয়া নয়।
সার্বক্ষনিক পরিচর্যা অবকাশের সময় অস্থায়ী হিসেবে করার মত কোন চাকরী নয়।
সার্বক্ষণিক পরিচর্যার ব্যাপারে ভ্রান্ত ধারনা
বিভিন্ন পরিস্থিতিতে লোকদের মধ্যে কিছু সাধারন ভ্রান্তি থেকে থাকে। সার্বক্ষনিক পরিচর্যায়রত ব্যক্তিরা এই ভ্রান্তি থেকে সম্পূর্ণ বিরত নয়। সার্বক্ষনিক পরিচর্যাকারী যে সকল ভ্রান্তি প্রভাবিত করে তার কিছু বিষয়:
1. যেহেতু আমি সার্বক্ষনিক পরিচর্যাকারী তাই আমি বিশেষ একজন ব্যক্তি।
2. যেহেতু আমি সার্বক্ষনিক পরিচর্যার কাজ করি, তাই আমি ভাল বেতন পাব।
3. যেহেতু আমি সার্বক্ষনিক পরিচর্যায় কাজ করে সবথেকে বড় আতিœক পদক্ষেপ নিয়েছি আর তাই আর কোন আতিœক ধাপে আমার যাবার প্রয়োজন নেই।
4. যেহেতু আমি সার্বক্ষনিক পরিচর্যার কাজ করি তাই আমি ভিত্তিরুপ পরিচর্যার কাজগুলো থেকে আরও ভাল কাজ করি।
5. যেহেতু আমি সার্বক্ষনিক পরিচর্যার কাজে ন্যস্ত তাই আমি বিদেশ ভ্রমন করব।
6. যেহেতু আমি সার্বক্ষনিক পরিচর্যায় রত তাই আমার একটি বড় বাড়ি থাকবে।
7. যেহেতু আমি সার্বক্ষনিক পরিচর্যার কাজ করি তাই আমার একটি গাড়ি থাকবে।
8. যেহেতু আমি সার্বক্ষনিক পরিচর্যাকারী তাই আমি ধনি হব।
9. যেহেতু আমি সার্বক্ষনিক পরিচর্যাকারী তাই আমি আধ্যাতিœক ব্যক্তি।
10. যেহেতু আমি সার্বক্ষনিক পরিচর্যার কাজ করি তাই আমি একটি ভাল বিবাহিদ ও পারিবারিক জীবন পাব।
11. যেহেতু আমি সার্বক্ষনিক পরিচর্যার কাজ করি তাই আমি প্রার্থনা, আরাধনা, ও বাক্য অধ্যয়নে বেশী সময় পাব।
12. যেহেতু আমি সর্বক্ষন পরিচর্যায়রত তাই ঈশ্বর আমাতে সন্তুষ্ট থাকেন।
13.যেহেতু আমি পরিচর্যার কাজে থাকি তাই আমি প্রেমে পূর্ণ থাকি।
14.যেহেতু আমি সার্বক্ষনিক পরিচর্যায়রত তাই আমার পক্ষে নির্ণয় করা সহজ হবে।
15.যেহেতু আমি সার্বক্ষনিক পরিচর্যার কাজ করি তাই আমি অভিষিক্ত এবং সংরক্ষিত থাকি।
16.যেহেতু আমি সার্বক্ষনিক পরিচর্যার কাজ করি তাই আমার সন্তানেরা ভাল কিছু করবে।
17.যেহেতু আমি সার্বক্ষনিক পরিচর্যাকারী তাই যে কোন উপায়ে আমি স্বর্গে অবশ্যই যাব।
18.যেহেতু আমি সর্বক্ষন পরিচর্যার কাজ করি তাই আমি অনুগত।
এই তালিকার মধ্যে কোনটিই প্রয়োজনীয় অর্থে সত্যি নয়। হতে পারে আপনি সত্য কিন্তু আপনার ক্ষেত্রে অথবা আপনার জীবনে যা কিছু আছে সব সত্য নাও হতে পারে। অবশ্যই এই তালিকাভুক্ত বিষয়গুলো এমন বিষয় নয় যা আপনা আপনি ঘটবে। সার্বক্ষনিক পরিচর্যায় আপনাকে অবশ্যই ঈশ্বরের অন্বেষন করতে হবে যে তার পরিকল্পনা আপনার জীবনে সফল হয়।
অধ্যায় ২
জাগতিক কাজ এবং পরিচর্যার কাজের মধ্যে পার্থক্য
এখানে একটি পার্থক্য আছে
কিন্তু তাহারা উহার দাস হইবে, তাহাতে আমার দাস হওয়া কি, ইহা তাহারা বুঝিতে পারিবে।
২য় বংশাবলি ১২:৮
যখন রহবিয়াম ঈশ্বরের বিরুদ্ধে গেলেন তখন ভাববাদী রহবিয়ামকে এক র্বাতা প্রেরন করলেন। ভাববাদী জানালেন যে ঈশ্বরের দাস হওয়া এবং অন্য দেশীয় রাজ্যের দাস হবার পার্থক্য রহবিয়াম বুঝতে পারবেন।
ঈশ্বরের জন্য কাজ করা এবং সমগ্র পৃথিবীর জন্য কাজ করার মধ্যে একটি পার্থক্য আছে। এই ধূসর পৃথিবীতে সম্পদ পূঞ্জীভূত করার কাজকে ঈশ্বরের আহবানে সাড়া দেবার সাথে কখনই তুলনা করা যায় না।
মরণশীল মানুষদের জন্য উচ্চতর সুযোগ হলো প্রকৃত ভিত্তিমূলে এক চিরস্থায়ী নগর তৈরী করা। অধিকাংশ লোকেরাই নিজেদের জীবনের জন্য এমন সব ক্ষনস্থায়ী নির্মান কাজ করেন যার কোন ভবিষ্যৎ নেই। এগুলো হলো ক্ষনস্থায়ী বালুর দূর্গ নির্মান যা সাধারন মানের লোকেরা তৈরী করে থাকেন।
ফারাও কে ছিলেন?
ফারাও ছিলেন শয়তানের এক রুপ। মিশর হলো জাগতিক পৃথিবীর রুপ আর ইস্রায়েল হলো ঈশ্বরের লোকদের রুপ। ফারাও ঈশ্বরের লোকদের প্রতি
কঠোর পরিশ্রম এবং নির্মান শহরের নিশৃান কাজ দ্বারা ক্লেশ ঘটিয়েছিল। বর্তমান ধর্ম নিরপেক্ষ কাজকে স্পষ্টভাবে এই অবস্থার সাথে তুলনা করা যায়।
অধিকাংশ ক্ষেত্রে ধর্ম নিরপেক্ষ পৃথিবী নগরের দালান কোঠা নির্মানে সময় ব্যয় করে। আকাশচূড়া পর্যন্ত আমরা অনেক উচু ও সুন্দর সুন্দর অট্রালিকা নির্মান করি কিন্তু ততদিনে আমরা মৃতপ্রায়।
এই জাগতিক পৃথিবীর কাজগুলো কঠোর, দুচিন্তাযুক্ত এবং ঘাম ঝড়ান হয়। আমরা কঠোর থেকে কঠোরতর পরিশ্রম করেই যাচ্ছি এটা না বুঝতে পেরে যে আমরা মূলত পৃথিবীর সম্পদে পূর্ণ শহরগুলো নির্মান করছি। নিউইর্য়ক, প্যারিস, লন্ডন, আক্রা, লাগোস, এবং নাইরোবির মত শহরগুলো মানুষের কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে নির্মিত হয়েছে।
মানুষ মৃত্যুতে ক্ষয় পাচ্ছে অর্থচ ঐ শহরগুলো টিকে থাকছে। ঐ সকল নির্মানকারী মানুষদের জীবনের সকল অবদান ঐ সম্পদপূর্ণ শহরগুলোর উন্নয়নেই পঞ্জিভূত রয়েছে। মনে রাখুন শয়তান যীশুকেও জগতের সমস্ত রাজ্য দেখিয়েছিল।
আর দিয়া বল তাঁহাকে বলিল, তোমাকেই আমি এই সমস্ত কর্ত্তৃত্ত্ব ও এই সকলের প্রতাপ দিব; কেননা ইহা আমার কাছে সমর্পিত হইয়াছে, আর আমার যাহাকে ইচ্ছা ইচ্ছা, তাহাকে দান করি।
লূক ৪:৬
এখানে আমরা দেখতে পাই যে, দিয়াবল পৃথিবীর সব নগরগুলোর ওপর কর্তৃত্ব রাখে। এই জাগতিক পৃথিবীর প্রভু হলো দিয়াবল (২ করিন্থীয় ৪:৪)। এই দিয়াবলই পৃথিবীতে মনুষ্যপুত্রদেরকে কঠোর পরিশ্রম করতে দিয়েছিল এবং তাদেরকে নগরগুলো নির্মানে পরিচালিত করেছিল।
খ্রিষ্টানব্যক্তিগণ ঐ নির্মানকারী ব্যক্তিদের দলে যোগ দিয়েছিল এবং সম্পদে পূর্ণ শহর নির্মানে তাদের অবদান রেখেছিল।
পরে মিসরের উপরে এক নূতন রাজা উঠিলেন, তিনি যোষেফকে জানিতেন না। তিনি আপন প্রজাদিগকে কহিলেন, দেখ, আমাদের অপেক্ষা ইস্রায়েল-সন্তানদের জাতি বহুসংখ্যক ও বলবান; আইস, আমরা তাহাদের সহিত বিবেচনাপূর্ব্বক ব্যবহার করি, পাছে তাহারা বাড়িয়া উঠে, এবং যুদ্ধ উপস্তিত হইলে তাহারাও শত্রু পক্ষে যোগ দিয়া আমাদের সহিত যুদ্ধ করে, এবং এ দেশ হইতে প্রস্থান করে। অতএব তাহারা ভার বহন দ্বারা উহাদিগকে দু:খ দিবার জন্য উহাদের উপরে কার্য্যশাসকদিগকে নিযুক্ত করিল। আর উহারা ফরৌণের নিমিত্ত ভান্ডারের নগর পিথোম ও রামিষেষ গাঁথিল। কিন্তু উহারা তাহাদের দ্বারা যত দু:খ পাইল, ততই বৃদ্ধি পাইতে ও ব্যাপ্ত হইতে লাগিল; তাই ইস্রায়েল-সন্তানদের বিষয়ে তাহারা অতিশয় উদ্বিগ্ন হইল।
যাত্রাপুস্তক ১:৮-১৩
ঠিক যেভাবে ফারাও মিশরকে নিয়ন্ত্রন করেছিলেন, সেভাবে শয়তান পৃথিবী এবং এই শহরগুলো নিয়ন্ত্রন করবার চেষ্ঠা করছে, এ কারনেই এই পৃথিবীর বিশৃঙ্খলা এবং দ্বন্দ শীর্ষে অবস্থান করছে।
যখন আপনি কোন আর্থিক প্রতিষ্ঠান, ব্যাংক অথবা ধর্ম নিরপেক্ষ কোন সংগঠনের কাজ করেন তখন আপনাকে ফারাওয়ের নেতৃত্বাধীন ইস্রায়েলদের সাথে তুলনা করা যায়; যেখানে অনেক বেশী কঠোরতা, দুশ্চিন্তা এবং ঘাম ঝড়ানো পরিশ্রমে আকাশচুম্বী অট্রালিকা নির্মানের মত কঠোর কাজ রয়েছে।
মোশী ইস্রায়েলের লোকদেরকে মুক্ত থাকতে অনুরোধ করেছিলেন যেন তারা সম্পূর্ণরুপে ঈশ্বরের কার্যে নিয়োজিত থাকতে পারে। যে কোন ব্যক্তি যিনি ঈশ্বরের পরিচর্যায় নিজেকে সম্পূর্ণরুপে ন্যস্ত রাখার প্রত্যাশায় আছেন তাদেরকে অবশ্যই এই পৃথিবী থেকে দুরত্ব রাখতে হবে। সার্বক্ষনিক পরিচর্যার কাজ হলো প্রভুর জন্য কাজ! মিশর থেকে দূরে যেয়ে মরুভূমিতে প্রভুর জন্য উৎসর্গ করা এবং ঈশ্বরের জন্য পবিত্রস্থান তৈরী করবার মতই হলো সার্বক্ষনিক পরিচর্যার কাজ! ঈশ্বর চান যেন তার লোকেরা তার জন্য মন্দির নির্মানে এবং আরাধনায় সময় ব্যয় করেন।
অবশ্যই জাগতিক ব্যবস্থা থেকে মুক্ত হওয়া সহজ নয়। মিশর ত্যাগ করাটাও মোশি এবং ইস্রায়েলের সন্তানদের জন্য সহজ বিষয় ছিল না। কঠোর পরিশ্রমের মধ্য দিয়েই ঈশ্বরের লোকেরা ফারাও রাজার নিকট হতে মুক্ত হতে পেরেছিল।
প্রিয় বন্ধু, এই ধর্ম নিরপেক্ষ জগত থেকে মুক্ত হওয়া আপনার জন্যও সহজ নয়। যদি সেটা ঘটে তবে অনেক কঠোর সংগ্রামের মধ্য দিয়েই তা সম্ভব।
ফারাও থেকে মুক্ত হওয়ার চারটি ধাপ
তৎকালে ফৌরন আমাদিগকে ছাড়িয়া দিবার বিষয়ে নিষ্ঠুর হইলে সদাপ্রভু মিসর দেশে সমস্ত প্রথমজাত ফলকে, মনুষ্যের প্রথমজাত ও পশুর প্রথমজাত ফল সকলকে বধ করিলেন, এই নিমিত্তে আমি গর্ম্ভ উন্মোচক পুংসন্তান সকলকে সদাপ্রভুর উদ্দেশে বলিদান করি, কিন্তু আমার প্রথম জাত পুত্র সকলকে মুক্ত করি।
যাত্রাপুস্তক ১৩:১৫
ইস্রায়েলের সন্তানদের স্বাধীনতায় ফারাও সন্তুষ্ট ছিলেন না। সার্বক্ষনিক পরিচর্যার প্রত্যেক খ্রিস্ট বিশ্বাসীকে অবশ্যই ঐ চারটি ধাপ থেকে বের হয়ে আসতে হবে। যেহেতু আপনি ঐ পরিস্থিতি গুলোর সাথে বর্তমানে আছেন তাই অবশ্যই আপনাকে প্রতিটি পরিস্থিতিকে জানতে হবে।
ধাপ ১: ফারাও চাইবেন না যে আপনি তার চাকরীটি ত্যাগ করেন।
ফরৌন কহিলেন, সদাপ্রভু কে, যে আমি তাহার কথা শুনিয়া ইস্রায়েলকে ছাড়িয়া দিব? আমি সদাপ্রভুকে জানি না, ইস্রায়েলকেও ছাড়িয়া দিব না।
যাত্রাপুস্তক ৫:২
ফারাওর ইচ্ছা যেন আপনি আমৃত্যু তার জন্য কাজ করেন। ফারাও চাইবে যতক্ষন না পর্যন্ত কঠোর পরিশ্রমে আপনার মৃত্যু হয় ততক্ষন আপনি কাজ করেন। ফারাও আপনাকে এক কাল্পনিক অবসরের প্রস্তাবে প্রলোভিত করবে যা কখনইবাস্তবায়িত হবে না।
ধাপ ২: ফারও ফারাও ঈশ্বরের কাজে যুক্ত হবার জন্য আপনাকে অনুমতি দেবে কিন্তু সে চাইবে যেন আপনি তার সঙ্গেই থাকেন।
তখন ফরৌন মোশি ও হারোণকে ডাকাইয়া কহিলেন, তোমরা যাও, দেশের মধ্যে তোমাদের ঈশ্বরের উদ্দেশে যজ্ঞ কর।
যাত্রাপুস্তক ৮:২৫
এই কথা ফারাও চাপ তৈরী করবে। সে চাইবে যেন আপনি ঈশ্বরের জন্য কাজ করেন কিন্তু মিশরে অবস্থান করে। আপনাকে অবশ্যই ফারাওর জন্য পিরামিড তৈরী করতে হবে। এমন কাজকে শায়িত পরিচর্যার কাজ বলে। যেখানে আপনি ঈশ্বরের সেবা করছেন এবং অন্যদিকে অর্থ উর্পাজনে ব্যস্ত রাখছেন।
ফারাও আপনাকে ঈশ্বরের গৃহে যেতে বলবে কিন্তু আপনি পারবেন না। আপনি তার হাতেই থাকবেন, তারই থাকবেন এবং সেই সকল সিদ্ধান্ত গ্রহন করবে। আপনার ঘুম থেকে ওঠা এবং ঘুমাতে যাওয়ার সিদ্ধান্ত সে গ্রহন করবে। ফারাও সিদ্ধান্ত নেবেন যে প্রত্যেক সপ্তাহের প্রতিটি দিনে আপনি